কলকাতা : 'ইস্টবেঙ্গলের যারা রয়েছেন তাদের একটু মন খারাপ না? একটু ছেড়ে খেলুন। চিন্তা নেই সমস্যা মিটে যাবে।' লাল-হলুদে ক্লাব-ইনভেস্টর দ্বন্দ্বের আবহে এমনই অর্থবহ মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতবার আইএসএল মরশুমের প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যস্থতাতেই ইস্টবেঙ্গলে এসেছিল ইনভেস্টর। তবে চলতি আইএসএলের আগে ক্লাব ও ইনভেস্টর কর্তাদের মধ্যে প্রকাশ্যে চলে এসেছে দ্বন্দ্ব। দু-পক্ষই কার্যত তাঁদের বক্তব্যে অনড়। এই পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের মধ্যেও দ্বন্দ্বও চলে এসেছে প্রকাশ্যে। কিছুদিন আগে ইনভেস্টরের চুক্তিতে সই করা ও না করার সমর্থনে দুই দলের সমর্থকদের বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল লেডলি ক্লডিয়াস সরণি। চলতে থাকার জটের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীর এই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য।


কার্যত ঘুরিয়ে লাল-হলুদের ক্লাব কর্তাদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, 'অনেক টাকার তো বিষয় চুক্তিতে, তাই কিছু দাবি তো থাকবেই। একটু চালিয়ে খেলে দেখুন সমস্যা মিটে যাবে। আমি আশা রাখি সমস্যা মিটে যাবে। চাই মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দুই ক্লাবই আইএসএলে খেলুক।' লাল-হলুদের কর্তাদের কিছুটা নমনীয় হওয়ার বার্তাই খেলা হবে প্রকল্পের উদ্বোধনের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী দিলেন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।


গত মরসুমের একদম শেষ মুহূর্তে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে অন্তর্ভুক্তি ঘটে ইস্টবেঙ্গলের। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে লাল-হলুদে এসেছিল স্পনসর। লগ্নিকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তিতে সই করেন ইস্ট বেঙ্গল কর্তারা। কিন্তু এই মরসুমে যখন আইএসএল এগিয়ে আসছে তখন থেকেই লগ্নিকারী সংস্থার সঙ্গে, ক্লাব কর্তৃপক্ষের মতবিরোধ। সূত্রের খবর, লগ্নিকারীদের দাবি ক্লাব কর্তারা চূড়ান্ত চুক্তিতে সই না করলে তাঁরা বিনিয়োগ করবেন না। এদিকে ক্লাব কর্তাদের অভিযোগ, প্রাথমিক চুক্তির সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তির বিস্তর ফারাক রয়েছে। চূড়ান্ত চুক্তিতে সই করলে, ক্লাব কর্তৃপক্ষের হাতে কোনও অধিকারই থাকবে না। সমর্থকদের ক্লাবে ঢোকা-বেরনোর ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ জারি হবে। জানা যায়, বিরোধের মধ্যেই চুক্তিপত্র পরিমার্জিত করে পাঠায় লগ্নিকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্ট। কিন্তু তাতেও সম্মত না হওয়ায় সই করেননি ক্লাব কর্তারা। এর পরই সর্বসম্মতিক্রমে ক্লাব কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, চুক্তিপত্রে সই করা হবে না। যার জেরে মাঝে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সামনে। এই চুক্তি-বিরোধ নিয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে সমর্থকদের এক পক্ষ। অপরপক্ষ আবার চুক্তিতে সইয়ের পক্ষে। তাই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অদূরে সংঘর্ষ বাধে। শেষমেশ পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয় পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে।