করোনা মহামারীর কালো ছায়া গোটা দেশের মাথার উপরে। আক্রান্তের সংখ্যা মিলিয়ন পার করেছে। রোজ আক্রান্ত অর্ধ-লক্ষ করে নাগরিক। আবার করোনার বৃহত্তর প্রভাবে গোটা দেশজুড়ে কর্মহীনতা, হতাশায় আত্মহত্যা, পরিযায়ী শ্রমিকের খাদ্যাভাব ইত্যাদিও বাড়ছে। কিন্তু সোনা-রুপো-হিরে দিয়ে ফেস মাস্ক তৈরির বিচিত্র বিলাসিতাও ক্রমবর্ধমান সমাজের অন্য একটি অংশের মধ্যে। পুণায় এবং কটকে দুই ব্যবসায়ী সোনার মাস্ক পরে রাস্তার ঘুরে আগেই নজির গড়েছেন। সুরাতে দেখা গিয়েছে ঝকমকে রেশমী কাপড়ের মাস্কের উপরে হিরে বসানো মাস্ক। এবার খোঁজ মিললো কোয়েম্বত্তুরের স্বর্ণবণিক রাধাকৃষ্ণণ সুন্দরম আচার্যের, যিনি মাস্ক বানাচ্ছেন সোনা দিয়ে, যার ভিতরে সেলাই থাকছে রুপোর তার দিয়ে।


আচার্যের বক্তব্য, আজকের সময়ে মাস্ক যে অতি মূল্যবান বস্তু সেই বার্তাই পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে এই মহার্ঘ্য মাস্কের মাধ্যমে।১৮ ক্যারেট সোনায় তৈরি মাস্কের দাম ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা মাত্র। বিক্রি হচ্ছে রুপোর মাস্কও, দাম ১৫ হাজার টাকা! নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলেছেন,কারা এই বাজারে কিনছে এই মাস্ক!আচার্য জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত তিনি ৯টি মাস্কের অর্ডার পেয়েছেন।বানানোর কাজ চলছে। তাঁর কথায়, ‘সাধারণ মানুষ এই মাস্ক অ্যাফোর্ড করতে পারবেন না। বিত্তবান মানুষ বিয়েবাড়ি বা এই ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এমন মাস্ক পরতে চাইছেন। নেটিজেনদের প্রশ্ন এই ধরনের মাস্ক আদৌ ভাইরাস আটকাতে সক্ষম কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়ে কিছু মানুষ কেমন করে এটা ব্যবহার করতে চাইছেন!’


সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে এই মাস্ক ঘিরে। কেউ বলছেন, ‘আর্থিক মন্দায় যেখানে মানুষ খেতে পাচ্ছে না, কাজ-কারবার বন্ধ সেখানে কেউ এই বিলাসিতা দেখায়!’

কেউ বা বলছেন, ‘সোনা ব্যবহার তো খুব কমন, কিন্তু মাঝেমধ্যে কমনসেন্সও ব্যবহার করা হোক।'


কেউ বা বলছেন, ‘এই মাস্ক এক তো চুরি হতে পারে, আর যদি চুরি হয় তাহলে করোনা খুশি হবে নতুন উপায়ে ছড়িয়ে পড়তে পারার জন্য।'


কারও বা সরল প্রশ্ন, ‘১৫ টাকার মাস্ক যা বিপদ থেকে বাঁচাতে পারে সেটা পরীক্ষিত, তা ছেড়ে পরীক্ষা না হওয়া এমন মহা মূল্যবান মাস্ক কেন কেউ পরছেন? মাস্কের প্রাথমিক কাজ তো ভাইরাস আটকানো। সেটা এই দামি মাস্কটায় সম্ভব নয়।'