কলকাতা: গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকেই শুরু হয়েছিল হামলা, পাল্টা প্রত্যাঘাত। বৃহস্পতিবার সন্ধেরাতের দিকেই ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ঝাঁকে ঝাঁকে ঢুকে পড়ে পাক ড্রোন। ভারতীয় এয়ার ডিফেন্স অবশ্য সতর্কই ছিল। মাঝ আকাশেই অধিকাংশ ড্রোনকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। তবে আতঙ্ক কিছু কম ছড়ায়নি সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে। ভারতীয় সেনা সতর্কতাবশত বেশ কিছু গ্রাম এর আগেই খালি করে দিয়েছিল। তবে গতকাল জম্মু, রাজস্থান, গুজরাতের একাংশ সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট করে দেওয়া হয়। ড্রোন হামলার ভয়ে, অন্ধকারে ডুবে যায় জম্মু, জয়সলমের, বারমেরের একাধিক জায়গা। আর আজ সন্ধে নামতেই, রাজস্থানের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে জারি হল হাই এলার্ট।

আজ বিকেল ৫টার মধ্যে জয়সলমীর ও বারমেরের সমস্ত বাজার এলাকাগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জয়সলমের, বারমের, বিকানের, শ্রীগঙ্গানগর ও ফালোদিতে আজ সন্ধে ৬টা থেকে শুরু করে আগামীকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউটের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুরক্ষার জন্যই নেওয়া হয়েছে এই পদক্ষেপ। এই এলাকাগুলিতে আগামী ১২ ঘণ্টায় জ্বালানো যাবে না  কোনও আলো। তবে শুধু আজকের জন্য না, আগামীকাল অর্থাৎ শনিবারও বিকানের, শ্রীগঙ্গানগর ও ফালোদিতে সন্ধে ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কোনও আলোর ব্যবহার করা যাবে না। 

জয়সলমীরে জনগণের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল এমন সমস্ত অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। শুধু ঘরের ভিতরে যে আলো জ্বালানো নিষেধ এমনটা নয়, বাড়ির বাইরেও মিটারের যে সমস্ত আলোগুলি রয়েছে সেগুলি কালো টেপ দিয়ে ঢেকে দিতে বলা হয়েছে বা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে। মোট কথা, একেবারে নিশ্চিদ্র অন্ধকারের কথা বলা হয়েছে। সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে শ্রীগঙ্গানগর সহ সমস্ত সীমান্তবর্তী এলাকায় বিয়ে ও যে কোনও ধরণের কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আলোর ব্যবহার সীমিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিজে সহ যে কোনও ধরণের মাইক বাজানো যাবে না বলে জানানো হয়েছে। খালি করে দেওয়া হচ্ছে বিকানেরের সমস্ত হোস্টেল। সরকারি সমস্ত ছুটি ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ভারত পাকিস্তানের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই সমস্ত চিকিৎসক ও নার্সিং কর্মীদের ছুটি বাতিল করল রাজস্থান সরকার। এখানেই শেষ নয়, পরিস্থিতি বিবেচনা করে, তৈরি করা হয়েছে একাধিক অস্থায়ী ওয়ার্ড। আইসিইউ-তেও শয্যার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ভরতপুর প্রশাসনও প্রস্তুতি শুরু করেছে। যুদ্ধকালীপ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে জেলা আরবিএম হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং অস্থায়ী ওয়ার্ডেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকল মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের যুদ্ধের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করে তোলা হচ্ছে।