নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে রাজনীতির পারদ চড়ছে দেশের অন্দরেও। Operation Sindoor নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। আর সেই বিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী পাকিস্তানের কাছ থেকে সম্মান পেতে মুখিয়ে রয়েছেন কি না, প্রশ্ন তোলেন বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান আমিত মালব্য। পাল্টা পাক নাগরিক সম্মানের জন্য বিজেপি নেতাদের নাম সুপারিশ করল কংগ্রেস। (BJP vs Congress)

Operation Sindoor নিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। অভিযানের শুরুতে পাকিস্তানকে সতর্ক করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। পাকিস্তানকে কেন আগে সতর্ক করা হল, তা কি অপরাধ নয়, প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল। আগে থেকে পাকিস্তানকে সতর্ক করায় ভারত ক’টি যুদ্ধবিমান হারিয়েছে, তাও জানতে চান তিনি। আর সেই নিয়ে রাহুলকে ‘মিরজাফর’ বলে উল্লেখ করেন মালব্য। শুধু তাই নয়, রাহুল পাকিস্তানের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘Nishan-E-Pakistan’ পেতে উৎসুক কি না, কটাক্ষ করেন তিনি। (Nishan-e-Pakistan)

এরই পাল্টা পাক নাগরিক সম্মানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং জয়শঙ্করের নাম সুপারিশ করেন কংগ্রেস নেতা পবন খেরা। তিনি বলেন, “নিশান-এ-পাকিস্তান আর একজনের পাওয়া উচিত, যিনি বিনা নিমন্ত্রণে নওয়াজ শরিফের কাছে বিরিয়ানি খেতে গিয়েছিলেন। হতে পারে উনি পাবেন। আমার তো মনে হয়, ওঁর পাওয়া উচিত। আর একজনের পাওয়া উচিত, যিনি অভিযানের শুরুতে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে জঙ্গিঘাঁটিতে আঘাত করছেন। পাকিস্তানকে কত লাভের সুযোগ করে দিয়েছেন উনি। হতে পারে উনিই পাবেন। আমেরিকার ঘনিষ্ঠও উনি। কোন দেশ ওঁকে কী পুরস্কার দেয় দেখা যাক।”

পাকিস্তানের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান নিয়ে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক তরজা চললেও, ভারতীয়দের ওই সম্মান পাওয়ার নজির রয়েছে। ২০২৩ সালে শেষ বার সর্বোচ্চ পাক নাগরিক সম্মান পান সৈয়দনা মুফদ্দল সইফউদ্দিন। সইফউদ্দিন দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রধান। ২০২০ সালে সর্বোচ্চ পাক নাগরিক সম্মান পান কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাকামী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। এমনকি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেসাইও সর্বোচ্চ পাক নাগরিক সম্মান পান। সেকথা তুলে ধরেছেন কংগ্রেস নেতা পবনও। 

বিজেপি-কে ইতিহাস স্মরণ করাতে গিয়ে কয়েক দিন আগেই মোরারজি দেসাইয়ের কথা তোলেন পবন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “শুধু আজ বলে নয়। মোরারজি দেসাইকে জনতা পার্টি, জনসঙ্ঘ মিলে প্রধানমন্ত্রী করেছিল। ইতিহাস জানে, মোরারজি দেসাই জিয়াউল হককে ফোন করে বলেছিলেন, ‘RAW জানিয়েছে কাহুতায় আপনাদের পরমাণু অস্ত্র সম্পর্কে’। পাকিস্তানে RAW-র শিবির, পরিকাঠামো সম্পর্কে সব জানিয়ে দেন। এর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই RAW-র লোকজনকে হারাতে হয় আমাদের, গায়েব করে দেওয়া হয়, মেরে ফেলা হয় জানি না। RAW-র কয়েক দশকের পরিশ্রমে জল ঢেলে দিয়েছিলেন মোরারজি দেসাই। সেই মোরারজি দেসাইকে পাকিস্তান নিশান-এ-পাকিস্তান সম্মান দিয়েছিল। আমরা চুপ রয়েছি মানে, যন্ত্রণা ভুলে যাইনি। সেই পাপের যন্ত্রণা আজও ভোগ করছি। জয়শঙ্কর যা করেছেন, তাও পাপ। চিন ও আমেরিকাকে নিয়ে যে মৌনতা অবলম্বন করছেন জয়শঙ্কর এবং নরেন্দ্র মোদি, তাও পাপ।”

তবে শুধুমাত্র মোরারজি দেসাই-ই নন, পাক নাগরিক সম্মান প্রাপকের তালিকায় রয়েছেন প্রয়াত অভিনেতা দিলীপ কুমারও। তিনি পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘নিশান-এ-ইমতিয়াজ’ পেয়েছিলেন। বিচ্ছিন্নতাকামী নেতা গিলানিকে পাকিস্তান সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানই দেয়, ‘Nishan-E-Pakistan’. করাচিতে বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় নিহত বিমানসেবিকা নীরজা ভানোটকে পাকিস্তান মরণোত্তর ‘Tamgha-e-Pakestan’ সম্মান প্রদান করে।