দীপক ঘোষ ও বিজেন্দ্র সিংহ, কলকাতা: কংগ্রেসের নতুন ওয়ার্কিং কমিটিতে (Congress New Working Committee) চমক। অধীর চৌধুরীর পাশাপাশি, বাংলা থেকে জায়গা পেলেন দীপা দাশমুন্সি। ওয়ার্কিং কমিটিতে রয়েছেন, সভাপতি নির্বাচনে খাড়গের প্রতিদ্বন্দ্বী শশী তারুরও। কমিটিতে আছেন একসময়ের বিদ্রোহী নেতা হিসেবে পরিচিত আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারিরাও। অশোক গহলৌতকে বার্তা দিতে, ওয়ার্কিং কমিটিতে আনা হয়েছে সচিন পায়লটকে।


বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। আর চলতি বছরের শেষে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তার আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর জন্মবার্ষিকীর দিনে, ওয়ার্কিং কমিটিকে ঢেলে সাজাল কংগ্রেস। থাকল বড়সড় চমকও।অধীর চৌধুরীর পাশাপাশি, বাংলা থেকে জায়গা পেলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সি।

সাম্প্রতিক কালে বঙ্গ রাজনীতিতে তাঁকে সেভাবে সক্রিয় ভূমিকায় না দেখা গেলেও, ত্রিপুরা ও হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে দীপাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিল কংগ্রেস। এর মধ্যে হিমাচলে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যূত করেছে কংগ্রেস। বর্তমানে তেলঙ্গানাতেও একই দায়িত্ব পালন করছেন। এই প্রেক্ষাপটেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির স্ত্রী-কে একেবারে জাতীয় রাজনীতিতে জায়গা দিল কংগ্রেস। এদিন দীপা দাশমুন্সি বলেন, “আমি ভীষণ খুশি, বিশেষ করে এমন একটা দিনে হয়েছে, রাজীব গাঁধীর জন্মতিথি। অপ্রত্যাশিত উপহার। এই জায়গায় পার্টি যে বিশ্বাস করে দিয়েছে, পার্টির প্রতি অনুগত আছি, সঙ্গে আরও আনুগত্য প্রকাশ করছি। আরও বড় কাজ করার অঙ্গিকার করছি।’’


নতুন ওয়ার্কিং কমিটিতে সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিং, রাহুল গাঁধীর পরই, ৫ নম্বরে নাম রয়েছে লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরীর। তিনি বলেন, “সভাপতি খাড়গে মনে করেছেন এখানে মনোনীত করা যেতে পারে, এটা আমার কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয়। দেশে এত নেতার মধ্যে, আমার স্থান হয়েছে ৫ নম্বরে, এটা আমার কাছে কতটা আনন্দের কতটা সৌভাগ্যের তা তো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’’

চমকের এখানেই শেষ নয়। কংগ্রেসের নতুন ওয়ার্কিং কমিটিতে রয়েছেন, সভাপতি নির্বাচনে মল্লিকার্জুন খাড়গের প্রতিদ্বন্দ্বী সাংসদ শশী তারুরও। এমনকী একটা সময় দলে বিক্ষুব্ধ হিসেবে গণ্য হলেও, ওয়ার্কিং কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারি-রা। স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন, ত্রিপুরায় বিজেপি থেকে ফেরা দলের পুরনো বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনও। এবিষয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, “কংগ্রেস কখনও সংকীর্ণ রাজনীতি করে না, দলের সংবিধানে আছে যে কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারে। কখনও বলা হয়নি যিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাঁর ডানা ছাঁটা হবে।’’

কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনকে একটা সময়, লোক দেখানো ভোট বলে কটাক্ষ করেছিল বিজেপি। এমনকী বিদ্রোহী নেতাদের গান্ধী পরিবার গুরুত্ব দেয় না বলেও মাঝেমধ্যে মন্তব্য করেন বিজেপি নেতারা। এবার নতুন ওয়ার্কিং কমিটিতে একের পর এক চমক দিয়ে, কার্যত সেই সমস্ত কটাক্ষের জবাব দিল কংগ্রেস। যদিও তাদের নতুন কমিটিকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। চলতি বছরেই ভোট হবে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত ও কংগ্রেস বিধায়ক সচিন পায়লটের দ্বন্দ্ব নানা সময়ে, কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। কিন্তু, দল যে দু-জনকেই সমান গুরুত্ব দিচ্ছে, সেই বার্তা দিতে সচিনকেও ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য করল কংগ্রেস।

আরও পড়ুন: North 24 Parganas Weather: আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিতে নাজেহাল, রোদ ঝলমলে আকাশ উত্তর ২৪ পরগনায়