নয়াদিল্লি: রাহুল গাঁধী লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সূচনা করবেন বলে কথা ছিল। কিন্তু দলের সাংসদ গৌরব গগৈয়ের (Gaurav Gogoi) হাতেই গুরুদায়িত্ব ছাড়লেন রাহুল। কংগ্রেসের তরফে গৌরবই কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন। মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাও শুরু করেন তিনিই। আর তাতে আগাগোড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করলেন তিনি। (No Confidence Motion)


বিগত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর। এখনও পর্যন্ত ১৭০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ঘরছাড়া প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সংসদে কেন তা বিয়ে বিবৃতি দিচ্ছেন না, আগাগোড়া প্রশ্ন তুলে আসছিলেন বিরোধীরা। তার জন্যই মণিপুর নিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত বলে জানান বিরোধীরা। এদিন মোদিকেই তীব্র আক্রমণ করলেন গৌরব।


রাহুল গাঁধীর উপস্থিতিতেই এদিন লোকসভায় বক্তৃতা শুরু করেন গৌরব। তিনি বলেন, "আমরা ভারতের কথা বলছি। দেশের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী সংসদে আসুন, সমবেদনা জানান, এটাই চেয়েছিলাম আমরা, যাতে মণিপুরের মানুষ জানতে পারেন যে, গোটা দেশ তাঁদের পাশে রয়েছে। কিন্তু তা হয়নি। মৌনব্রত পালন করছিলেন প্রধানমন্ত্রী। না লোকসভা, না রাজ্যসভায়, কোথাও মুখ খুলতে রাজি হননি তিনি। তাঁর মৌনব্রত ভাঙতেই অনাস্থা প্রস্তাব এনেছি আমরা।"


আরও পড়ুন: Derek O Brien Suspended : রাজ্যসভায় তুমুল উত্তেজনা, বাকি বাদল অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড ডেরেক


মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতির জন্যও মোদিকেই দায়ী করেন গৌরব। মোদির মৌনতার নেপথ্যেও বিশেষ কারণ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। গৌরব বলেন, "প্রধানমন্ত্রী কেন নীরব, তার উত্তর তিনটি। ১) মণিপুর হিংসা নিয়ে কথা বললে মণিপুরে বিজেপি-র ডাবল ইঞ্জিন সরকার যে ব্যর্থ হয়েছে, তা স্বীকার করে নিতে হবে। স্বীকার করতে হবে যে মণিপুরে তাঁদের সরকার ব্যর্থ, বিফল। ২) শান্তি, সম্প্রীতির যে বাতাবরণ এতদিন ছিল। কিন্তু গত দু'-তিন বছরে এত উস্কানিমূলক পদক্ষেপ করেছেন যে, আজ সমাজে বিভাজন তৈরি হয়েছে। ৩)মণিপুর অথবা উত্তর পূর্বাঞ্চলে এই প্রথম হিংসার ঘটনা ঘটল না। আমি নিজে উত্তর-পূর্বের বাসিন্দা। আমি বলছি, আগেও হিংসা হয়েছে। কিন্তু সমাজে এমন মেরুকরণ, এমন বিভাজন, এমন ঘৃণা, আগে কখনও দেখিনি।"


গৌরব এদিন আরও বলেন, যে সরকার এক দেশের কথা বলে, আজ তারা মণিপুরকে ভেঙে দু'টুকরো করে দিয়েছেন। বিজেপি-কে আজ অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিখ্যাত সেই উক্তিও স্মরণ করিয়ে দেন গৌরব। বলেন, "বাজপেয়ী রাজধর্ম পালনের কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন, রাজা বা শাসকের কখনও প্রজাদের বৈষম্যের নজরে দেখা উচিত নয়। জন্ম, জাতি, সম্প্রদায়ের নিরিখে প্রজাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হতে দেওয়া উচিত নয়।"