নয়াদিল্লি: বয়স এবং স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ ছিলই। সক্রিয় রাজনীতিতে আর কতদিন থাকতে পারবেন তিনি, জল্পনা চলছিলই। সেই আবহেই বুধবার রাজ্যসভার জন্য মনোনয়ন জমা দেন সনিয়া গাঁধী। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে রায়বরেলীর কংগ্রেস সাংসদ সনিয়া, যা গাঁধী পরিবারের গড় হিসেবেও পরিচিত। সেই রায়বরেলীকে বিদায়ী চিঠি লিখলেন সনিয়া। (Sonia Gandhi)


বুধবার রাজস্থানের জয়পুর থেকে রাজ্যসভার জন্য মনোনয়ন জমা দেন সনিয়া। এর পর, বৃহস্পতিবার রায়বরেলীর বাসিন্দাদের উদ্দেশে সনিয়ার লেখা বিদায়ী চিঠি প্রকাশ করে কংগ্রেস। ওই চিঠিতে সনিয়া লেখেন, 'দিল্লিতে আমার পরিবার অসম্পূর্ণ। রায়বরেলী গেলে, আপনাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হলেই তা সম্পূর্ণ হয়। অনেক পুরনো সম্পর্ক। শ্বশুরবাড়ির দৌলতেই এই সৌভাগ্য হয়েছে আমার। রায়বরেলীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক গভীর। স্বাধীনতার পর প্রথম লোকসভা নির্বাচনে আমার শ্বশুর মহাশয় ফিরোজ গাঁধীকে আপনারা জিতিয়ে দিল্লি পাঠিয়েছিলেন। ওঁর পর, আমার শাশুড়ি ইন্দিরা গাঁধীকেও আপন করে নিয়েছিলেন আপনারা। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই ধারা বজায় রয়েছে। জীবনের সমস্ত ওঠাপড়া, কঠিন সময়ে, শুধুমাত্র ভালবাসা আর উৎসাহে ভর করে এগিয়ে গিয়েছি আমরা। যত সময় পেরিয়েছে, ততই আস্থা বেড়েছে'। (Sonia Gandhi's Letter to Raebareli)


নিজের ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়ার প্রসঙ্গ টেনে সনিয়া আরও লেখেন, ‘এই আলোকিত রাস্তায় আপানার আমাকেও হাঁটার সুযোগ করে দেন। শাশুড়ি, জীবনসঙ্গীকে হারিয়ে যখন এলাম আপনাদের কাছে, আমার জন্য আঁচল পেতে দিয়েছিলেন আপনারা। গত দুই নির্বাচনে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও স্তম্ভের মতো আমার পাশে ছিলেন আপনারা, যা আমি কখনও ভুলব না। আজ আমি যা হয়েছে, যতদূর এগিয়েছি, সব আপনাদের জন্য সম্ভব হয়েছে। তাই আপনাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষার চেষ্টা করে গিয়েছি আমি’।‘


আরও পড়ুন: Electoral Bonds: সবচেয়ে বেশি লাভবান BJP-ই, যে কারণে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে বিতর্ক গোড়া থেকে...



সনিয়া রায়বরেলীকে বিদায় জানালেও, তাঁর কন্যা, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা এবার সেখানে প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। কংগ্রেসের তরফে এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। তবে এবছর লোকসভা নির্বাচনে রায়বরেলী থেকেই নির্বাচনী রাজনীতিতে প্রিয়ঙ্কার অভিষেক ঘটতে পারে বলে কানাঘুষো চলছে। সনিয়ার চিঠিতে সেই নিয়ে কিছু নির্দিষ্ট করে লেখা না থাকলেও, তিনি জানিয়েছেন, বয়স এবং স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই এবার লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই সরাসরি আর রায়বরেলীর মানুষের সেবা করার সুযোগ মিলবে না। তবে যেভাবে রায়বরেলীর মানুষজন কঠিন সময়ে তাঁদের আগলে রেখেছিলেন, আগামী দিনেও তা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী সনিয়া। শীঘ্রই ফের দেখা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন সনিয়া।