নয়াদিল্লি: হরিয়ানায় জমি লেনদেনের মামলায় এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের চার্জশিটে নাম উঠল প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার। হরিয়ানায় পাঁচ একরের একটি জমি কেনাবেচায় আর্থিক তছরুপের মামলায় যে চার্জশিট দিয়েছে ED, তাতেই নাম রয়েছে কংগ্রেসের প্রিয়ঙ্কার। তাঁর স্বামী রবার্ট বঢরার নাম আগেই উঠেছিল চার্জশিটে। তবে দু'জনের কাউকেই অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। বরং এক জমি একাধিক বার হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় প্রিয়ঙ্কার নাম পাওয়া গিয়েছে বলেই জানানো হয়েছে শুধু। (Priyanka Gandhi Vadra)


প্রবাসী ভারতীয় ব্যবসায়ী সিসি থাম্পি, ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সুমিত চাড্ডার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে ED. তদন্তকারী সংস্থার দাবি, সরকারের গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ যে অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভাণ্ডারীর বিরুদ্ধে, তাঁকে সাহায্য করেছিলেন থাম্পি এবং চাড্ডা। ED-র দাবি, প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর জামাতা রবার্ট এবং কন্যা প্রিয়ঙ্কা হরিয়ানায় একটি জমি কিনেছিলেন। যে দালাল মারফত তাঁরা জমিটি কেনেন, সেই দালাল থাম্পিকেও জমি বিক্রি করেছিলেন। (ED Chargesheet)


চার্জশিটে ED জানিয়েছে, এইচএল পাহওয়া প্রিয়ঙ্কা এবং রবার্টকে ওই জমি বিক্রি করেন, তাতে যে টাকার লেনদেন হয়, তার কোনও রেকর্ড নেই। এমনকি রবার্ট পুরো টাকাও দেননি বলে অভিযোগ। ২০০৬ সালে প্রিয়ঙ্কাকে একটি কৃষিজমিও বিক্রি করেন পাহওয়া। পরে ২০১০ সালে ওই জমিই আবার প্রিয়ঙ্কার থেকে কিনে নেন তিনি। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে থাম্পি গ্রেফতার হন। রবার্টকে তিনি ১০ বছর ধরে চেনেন বলে নাকি জেরায় ED-কে জানান তিনি! z


আরও পড়ুন: বদলেছে খোলনলচে, এবার বদলে গেল নাম ! অযোধ্যা স্টেশনের নতুন নাম কী?


ব্যবসায়িক স্বার্থ ছাড়াও থাম্পি এবং বঢরার মধ্যে দীর্ঘদিনের যোগসূত্রিতা রয়েছে বলেও দাবি করেছে ED. দিল্লি এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে একাধিক বার দেখাও হয়েছে বলেও নাকি দাবি করেন থাম্পি! ED-র দাবি, ২০০৫ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে হরিয়ানায় পাহওয়ার থেকে জমি কিনেছিলেন থাম্পি। ED জানিয়েছে, ২০০৫-২০০৬ সালে রবার্ট ৪০.০৮ একরের মোট তিনটি জমি কেনেন পহওয়ার থেকে। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে আবার পাহওয়াকে জমি  বিক্রিও করে দেন তিনি। প্রিয়ঙ্কাও তা-ই করেন। 


তবে এই মামলায় যে চার্জশিট জমা করেছে ED, সেটি পলাতক অস্ত্র ব্যবসায়ী ভাণ্ডারীকে নিয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ, বৈদেশিক মুদ্রা আইন লঙ্ঘন এবং গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালে ব্রিটেনে পালিয়ে যান ভাণ্ডারী। এতে থাম্পি এবং চাড্ডা মধ্যস্থতা করেছিলেন বলে দাবি ED-র। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে লন্ডনে একটি সম্পত্তি কেনেন ভাণ্ডারী, সেটি সাজাতে রবার্টের থেকেই টাকা গিয়েছিল বলে দাবি ED-র। এমনকি লন্ডনে গিয়ে ওই বাড়িতে রবার্ট তিন-চার বার থেকেওছিলেন বলে দাবি রবার্টের।


যদিও চার্জশিটে প্রিয়ঙ্কার নাম রাখা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা নাম না করে বিজেপি-কে নিশানা করেন। বিরোধীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে উদ্দেশ্য়প্রণোদিত ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। পবন বলেন, "লোকসভা নির্বাচনের আর কী কী হয় দেখুন। এই তো সবে শুরু! এই প্রথম এমন কাজ হচ্ছে না। ভোটের আগে এমন ষড়যন্ত্র রচনা করে তাকে ওরা। করতে দিন।"