নয়াদিল্লি: বলিউড অভিনেত্রী জ্য়াকলিন ফার্নান্ডেজের (Jacqueline Fernandez) প্রাক্তন 'তোলাবাজ প্রেমিক' হিসেবেই গোটা দেশ চেনে তাঁকে। জেলে বসে একের পর এক প্রেমপত্র লিখে নজর কাড়েন তিনি। তবে এ বার আরও বড় ঘোষণা করলেন জেলবন্দি সুকেশ চন্দ্রশেখর (Sukesh Chandrasekhar)। জানালেন, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Elections 2024) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন তিনি। আর্থিক তছরুপ প্রতারণা থেকে কোটি কোটি টাকার তোলাবাজিতে গ্রেফতার হয়েছেন সুকেশ। এই মুহূর্তে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই সক্রিয় রাজনীতিতে পদার্পণের ঘোষণা করলেন।


নিজের রাজনৈতিক সংযোগ ফলাও করে জানিয়েছেন সুকেশ


গুরুগ্রামের একটি আইনি সংস্থার মাধ্যমে শনিবার পাঁচ পাতার বিবৃতি প্রকাশ করেছেন সুকেশ। দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় আম আদমি পার্টির সঙ্গে ভারত রাষ্ট্র সমিতি-র যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এর আগেও নিজের রাজনৈতিক সংযোগ, বিনোদন জগতে ওঠাবসা নিয়ে একের পর এক দাবি করেছেন সুকেশ। তবে কোনও প্রমাণ পেশ করতে পারেননি।


তবে সুকেশের নয়া দাবি ঘিরে সন্দেহ বাড়ছে। কারণ গত সপ্তাহের শুরুতে আম আদমি পার্টির সত্য়েন্দ্র জৈন, যিনি আবগারি মামলায় তিহাড় জেলেই রয়েছেন, তাঁর সঙ্গে নিজের একটি হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস করে দেন সুকেশ। এমনকি ভারত রাষ্ট্র সমিতির প্রধান তথা তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের মেয়ে কে কবিতার সঙ্গেও কথোপকথনের স্ক্রিনশট প্রকাশ করেন। 


আরও পড়ুন: Rahul Gandhi:‘আদানি ইস্যুতে ভীত স্পিকার, চা পানে ডেকেছিলেন’, ফের আক্রমণে রাহুল


এর পরই, শনিবার লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করলেন সুকেশ। তাঁর দাবি, দু'দিন আগে তদন্তকারী সংস্থার হাতেও ওই কথোপকথনের রেকর্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং কে কবিতাকে চিঠিও লেখেন সুকেশ। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই কি তিনি ওই চ্যাট ফাঁস করেছেন, নাকি এর নেপথ্যে অর্থনৈতিক কারণ রয়েছে? জিজ্ঞেস করা হলে সুকেশ জানান, এর মধ্যে কোনওটিই তাঁর অভিসন্ধি নয়। 


সুকেশের বক্তব্য, 'সত্য়ের ঊর্ধ্বে কেউ নন। আগেও বলেছি, আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি আমি। আমার মনে হয়, এ বার নিজের অবস্থান স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা উচিত আমার। সব গোপনীয়তা সরিয়ে, মাথা এবং মন থেকে বোঝা নামিয়ে, কালিমামুক্ত হতে চাই আমি। তাই মানুষের কল্যাণে কাজ করতে যাওয়ার আগে, মানুষের কাছে ভোট চাইতে যাওয়ার আগে,  সত্য তুলে ধরছি'।


সুকেশ কি লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য!


কিন্তু চাইলেই কি লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন সুকেশ? কী বলছে দেশের আইন? আইন অনুযায়ী, কোনও মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে দু'বছর বা তার বেশি জেল হলে, নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নেওয়া যায় না। কিন্তু দোষী সাব্য়স্ত হননি, শুধুমাত্র অভিযুক্ত হলে প্রার্থী হতে বাধা নেই। এই মুহূর্তে একাধিক মামলায় জেলে রয়েছেন সুকেশ। দেশের অন্যতম বৃহত্তম ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার মালিকের স্ত্রীর কাছ থেকে ২০০ কোটি টাকা হাতানোর অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। শনিবার সুকেশের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের নয়া চার্জশিট দায়ের করেছে ইডি। তাতে রেলিগেয়ার প্রোমোচার মলবিন্দ সিংহের স্ত্রী জাফনা সিংহের কাছ থেরে সুকেশ সাড়ে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।