নয়াদিল্লি: স্বরা ভাস্করের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার রায়ের বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর ও কলঙ্কজনক’ মন্তব্যের অভিযোগে আদালত অবমাননার ফৌজদারি আইনি প্রক্রিয়া শুরু করায় সম্মতি দিতে অস্বীকার করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল। বলিউড অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলার সূচনার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমোদন চেয়েছিলেন আইনজীবী অনুজ সাক্সেনা। প্রসঙ্গত, ১৯৭১ এর আদালত অবমাননা আইনের ১৫ ধারায় কারও বিরুদ্ধে মানহানির প্রক্রিয়া শুরু করতে গেলে অ্যাটর্নি জেনারেল বা সলিসিটর জেনারেলের সম্মতি নিতে হয়।
২০১৯ এর ৯ নভেম্বর দেশের তত্কালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মত রায়ে অযোধ্যায় ২.৭৭ একর জমি মামলার তিন পক্ষের অন্যতম রামলালার হাতে তুলে দেয়, রামমন্দির গড়ার পথ সুগম করে। স্বরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এক আলোচনাচক্রে অবমাননাসূচক মন্তব্য় করেছেন বলে অভিযোগ সাক্সেনা ও আরও কয়েকজনের। যদিও সাক্সেনাকে গত ২১ আগস্ট পাঠানো চিঠিতে বেনুগোপাল স্বরার দুটি প্যারাগ্রাফে বেরনো বক্তব্য একেবারেই তথ্যমূলক বলে মনে হয় এবং নিছকই তাঁর একটা ধারণা বলে জানিয়েছেন। বেনুগোপাল লিখেছেন, আমার মনে হয় না এটা এমন কোনও ব্যাপার যেখানে আদালতের সম্মানহানি বা তার কর্তৃত্বকে খাটো করার মতো অপরাধ ঘটেছে। তাই আমি স্বরা ভাস্করের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা প্রক্রিয়া শুরুর সম্মতি দিচ্ছি না।
অভিযোগ, আলোচনাচক্রে স্বরা বলেন, আমরা এখন এমন একটা অবস্থায় রয়েছি যেখানে আমাদের আদালতও নিশ্চিত নয়, তারা সংবিধানে বিশ্বাস করে কি করে না। আমরা এমন এক দেশে বাস করি, যেখানে আমাদের দেশের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে বলেছে, বাবরি মসজিদ ভাঙাটা বেআইনি, আবার একই রায়ে যারা মসজিদটা গুঁড়িয়ে দিল, তাদেরই পুরস্কৃত করেছে।
এ ব্য়াপারে বেনুগোপালের অভিমত, কথাগুলো সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ওপর, প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণ নয়। সুপ্রিম কোর্ট সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করা হয়নি বা এমন কিছু বলা হয়নি যা সুপ্রিম কোর্টের কর্তৃত্বকে কলঙ্কিত করবে বা তাকে ছোট করবে। দ্বিতীয় বক্তব্য়টি নিছকই একটি অস্পষ্ট মন্তব্য যার সঙ্গে বিশেষ কোনও আদালতের সম্পর্ক নেই এবং এতটাই মামুলি যাকে কেউই খুব গুরুত্ব দেবে না।
পিটিশনার বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সমালোচনা করে স্বরার মন্তব্য অবমাননাকর, শীর্ষ আদালতের মানহানি করাই তার উদ্দেশ্য ছিল। এটা শুধুমাত্র সস্তা প্রচার পাওয়ার চমকই নয়, শীর্ষ আদালতের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলার মরিয়া চেষ্টা। সুপ্রিম কোর্টের আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে মানুষের মনে অনাস্থার মনোভাব তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে, যা ফৌজদারি অবমাননার সামিল।