বালেশ্বর: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় সাহায্যের হাত বাড়াল রাজ্য। বাংলা থেকে দুর্ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন ১২জন চিকিৎসক। পাঠানো হচ্ছে ২ শববাহী গাড়ি। এছাড়াও ঘটনাস্থলে পাঠানো হচ্ছে বেশ কিছু অ্যাম্বুল্যান্স। দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারদের জন্য ১০ লক্ষ টাকা সাহায্য ঘোষণা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। অল্প আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা, গুরুতর আহতদের জন্য ২ লাখ টাকা সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছে রেলের তরফে।


করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই ট্যুইট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি ট্যুইটে লিখেছেন, 'শালিমার-করমন্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় আশঙ্কিত। বাংলা থেকে বহু যাত্রী রয়েছেন ওই ট্রেনে। আমাদের রাজ্যের বেশ কিছু বাসিন্দা জখম হয়েছেন। ওড়িশা সরকারের সঙ্গে এবং দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি।'


আপৎকালীন কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।  033- 22143526/ 22535185-এই দুটি নম্বর চালু করা হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও জানিয়েছেন, 'আমরা ৫-৬ জনের একটি টিম পাঠাচ্ছি ঘটনাস্থলে। ওড়িশা সরকারের সঙ্গে এবং রেলের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য। ঘটনার উপর আমি ব্যক্তিগত ভাবে নজর রাখছি।'


মানস ভুঁইয়া, দোলা সেন এবং আরও কয়েকজন আধিকারিক ইতিমধ্যেই বালাসোরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গিয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে অ্যাম্বুল্যান্স রওনা হয়েছে। ওই এলাকার যাবতীয় মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালকে অ্যালার্ট করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্র, উদ্ধারকাজে আর যা যা সাহায্য লাগবে তা করা হবে বলে ওড়িশা সরকারকে জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে।


প্রত্যক্ষদর্শী থেকে ট্রেনযাত্রীরা জানাচ্ছেন, দুই ট্রেনের সংঘর্ষের পরে একের পর এক কামরা শুধু লাইনচ্যুতই হয়নি। কার্যত দেশলাই বাক্সের মতো উল্টে গিয়েছে। যেখান থেকে খালি ভেসে আসছে দুর্ঘটনার কবলে পড়া দুর্ভাগ্যদের আর্তনাদ। ট্রেনের একাধির বগি শুধু উল্টে যাওয়াই নয়, ঘুটঘুটে অন্ধকারের মাঝেও ট্রেন লাইন ও গোটা এলাকা জুড়ে মানুষকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে তাঁরা দেখেছেন বলেই জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও ট্রেনযাত্রীরা। ভয়-আতঙ্কের আবহ সামলে তাঁদের বক্তব্য, চারিদিকে শুধুই রক্ত। কারও মাথা ফেটে গিয়েছে তো তো কারও হাত কেটে পড়েছে। প্রত্যেকেরই আশঙ্কা শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে।


প্রবল সংঘর্ষে তিনটি বাদে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সবকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। কার্যত ছিটকে গিয়ে কামরাগুলো পড়ে লাইনের বাইরে গিয়ে। মুখোমুখি সংঘর্ষের অভিঘাত এতটাই ছিল যে মালগাড়ির পাঁচটি বগিও লাইনচ্যুত হয়েছে। এতটাই জোরে দুই ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ লাগে যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন উঠে যায় মালগাড়ির ওপরে। ইতিমধ্যে খড়্গপুর থেকে বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারী দল রওনা দিয়েছে দুর্ঘটনাস্থলের দিকে। স্থানীয়দের বক্তব্য, সন্ধে ৭ টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।