নয়া দিল্লি: সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। চারিদিকে সারি সারি দেহ। আর্ত চিৎকার। বাঁচবার শেষ প্রচেষ্টা। চোখের সামনে দিয়ে চলে যাওয়া মুহূর্ত কয়েক আগেও একসঙ্গে হইহই করতে করতে যাওয়া সহযাত্রীদের দেহ। কারও দেহে নেই প্রাণ, কারও প্রাণটা যদিও আছে, কিন্তু কোনও কোনও অঙ্গ কাটা পড়েছে। 



ওড়িশার এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা থেকেও যে বেঁচে গিয়েছেন, ভাতে পারছেন না কেউ কেউ। তেমনই একজন নিজের অভিক্ষতাার কথা বলতে গিয়ে শিউরে উঠলেন।  শনিবার সকালে পাওয়া খবর অনুসারে ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়েছে অন্তত ২৩৩ জনের। মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। 

তিনি বললেন, "তখন ঘুমোচ্ছিলাম। ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জেগে উঠে দেখি প্রায় ১০-১৫ জন আমার উপর পড়ে।  আমি আমার হাত ও ঘাড়ে আঘাত পেয়েছি। ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছি" বললেন এক  বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি।


তিনি আরও বলেন, "যখন আমি ট্রেন থেকে নামলাম, দেখি চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ । একটি পা এখানে, একটি হাত সেখানে। কারও মুখ বিকৃত" । 


এখনও অবধি ২৩৮ জনের মৃত্যু


প্রসঙ্গত, ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রেল। আহতর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬০০। ৩টি ট্রেনের সংঘর্ষে লাইনচ্যুত করমণ্ডলের ১৫টি ও হাওড়া-যশোবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেসের ৩-৪টি কামরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের কামরায় এখনও অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা। ট্রেনের দরজা ভেঙে, গ্যাস কাটারের সাহায্যে চলছে উদ্ধারকাজ। নামানো হয়েছে সেনাবাহিনীকে।


ড্রোন ও স্নিফার ডগ নিয়েও চলছে তল্লাশি। অক্ষত কামরাগুলিতে স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে এনডিআরএফ। হেলিকপ্টারের সাহায্যেও যাত্রীদের উদ্ধার করা হচ্ছে। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে ওড়িশা পুলিশের ফরেন্সিক দল। রাজ্য সরকারের তরফে রাতে দুর্ঘটনাস্থলে যান মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও সাংসদ দোলা সেন।


আরও পড়ুন ; বালেশ্বরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়