বেজিং: মোকাবিলা পদ্ধতি ও পন্থা নিয়ে কার্যত হিমসিম অবস্থা নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চিনের। মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। ক্রমশ এর পরিধি বিস্তারলাভ করছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা।
এই পরিস্থিতিতে চিনা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দাবি, সম্ভবত সরাসরি সংক্রমণ বা স্পর্শ সংক্রমণ অথবা এরোসল (হাওয়ার মাধ্যমে) সংক্রমণ ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। চিনের স্বাস্থ্য ও মহামারী মোকাবিলা বিশেষজ্ঞ তথা সাংহাই অসামরিক বিষয়ক দফতরের উপ-প্রধান ঝেং কান বলেন, বাতাসে ভাসমান জলকণার সঙ্গে ভাইরাস মিশে এরোসল তৈরি করে। সেই এরোসল প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে সংক্রমণ বাঁধায়। যে কারণে, এই ভাইরাসের মোকাবিলা ও প্রতিরোধ করতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরাসরি সংক্রমণ বোঝাতে গিয়ে এক বিশেষজ্ঞ বলেন, করোনায় আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি যদি হাঁচেন বা কাশেন, তাহলে সংক্রমণ হাওয়ার মাধ্যমে ভেসে আশেপাশের মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। অন্যদিকে, ভাইরাস-এরোসলে সংক্রমিত কোনও বস্তুকে কোনও ব্যক্তি ছোঁয়ার পর সেই হাত নাকে-মুখে দেন, তাহলে স্পর্শের মাধ্যমে তিনিও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারেন।
চিনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরের স্থানীয় সামুদ্রিক খাবারের বাজারে উৎস হওয়া ২০১৯-এনসিওভি ভাইরাস এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশ্বে এখনও পর্যন্ত ৮১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চিনেই মারা গেছেন ৮১১ জন। মারণ-ক্ষমতার দিক দিয়ে নোভেল করোনাভাইরাস ইতিমধ্যেই ২০০২-০৩ সালে হানা দেওয়া সার্স ভাইরাসকে ছাপিয়ে গিয়েছে।
ভাইরাস মোকাবিলায় নাগরিকদের স্বচ্ছতার সচেতনতা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছে চিন প্রশাসন। সেখানে বলা হয়েছে, কোনওপ্রকার জনসমাগমের আয়োজন না করতে বা  ভিড় এড়িয়ে যেতে। জানলা ভাল করে খুলে রাখতে যাতে হাওয়া যাতায়াত করতে পারে। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে। পাশাপাশি ঘরবাড়ি নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে-- বিশেষ করে শৌচালয়, খাবারের জায়গা বা দরজার হাতল-- যেখানে নিয়মিত হাত দিতে হয়।