নয়াদিল্লি: কোভিডে ফের নাস্তানাবুদ হচ্ছে চিন। লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী কোভিডের কারণে ধাক্কা খেয়েছে সেদেশের অর্থনীতি।


বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চিন। চলতি মাসের শুরুর দিকেই কোভিড বিধি আলগা করেছিল চিন। দেশে কতদূর পর্যন্ত, কতটা ভয়াবহ ভাবে ছড়িয়েছে সংক্রমণ সেই বিষয়ে কোনও তথ্যই নেই। সিএনএন-এর রিপোর্ট সূত্রে খবর, একাধিক শহর ও জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে যে সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন কোভিড সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসছে।


কোভিড সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়তে থাকায় বহু বাসিন্দা ঘরবন্দি। দোকান-রেস্তরাঁও ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। সংক্রমণে লাগাম টানতে যাবতীয় কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়ায় লাগাম টানা হয়েছে। কর্মী সম্পদে ধাক্কা লাগার কারণেও ধাক্কা খেয়েছে উৎপাদন। সিএনএন-এর সূত্র অনুযায়ী, চিনের সাধারণত রাস্তায় যে পরিমাণ লোকজন নামত, সেই সংখ্যায় হঠাৎ করেই অনেকটা কমে গিয়েছে। যার ফলে হঠাৎ করে ধাক্কা খেয়েছে চাহিদা। সব মিলিয়ে রীতিমতো হোঁচট খেতে শুরু করেছে চিনের অর্থনীতি। 


কড়া নীতিতে ইতিমধ্যেই চাপ:
চিনের অর্থনীতিতে ইতিমধ্যেই চাপ চলছিল। বেজিং হঠাৎ কঠোর শূন্য-কোভিড নীতি থেকে সরে এসেছে। এর আগে দীর্ঘদিন চিনে কড়া কোভিড নীতি বলবৎ ছিল। তার জন্য় বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভও হয়েছিল। দীর্ঘ লকডাউনের কারণে খুচরো বাজারও প্রবল ধাক্কা খেয়েছে। আঁচ এসে পড়েছে কর্মসংস্থানেও। সেই কারণেই কোভিড থেকে নজর সরিয়ে অর্থনীতিতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল চিনের তরফে। যার অন্যতম উপায় ছিল কোভিড বিধিতে লাগাম দেওয়া।


চিন্তা বাড়াচ্ছে পরিসংখ্যান:
ডিসেম্বরের প্রথম কিছু সপ্তাহে গাড়ি ও বাড়ি বিক্রি তলানিতে গিয়েছে। ১ থেকে ১৮ ডিসেম্বরে গাড়ি প্রস্ততকারক সংস্থাগুলি সাড়ে ৯ লক্ষ ইউনিট গাড়ি বিক্রি করেছে। যা গত বছরের একই সময়ে হওয়া গাড়ি বিক্রির তুলনায় ১৫ শতাংশ কম।


একই ছবি বাড়ি বিক্রিতেও। ৩০টি বড় শহরে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বাড়ি বিক্রি ৪৪ শতাংশ কমেছে। বেজিং , সাংহাইয়ের মতো শহরে গত বছরের তুলনায় এই বছরের এই সময়ে বাড়ি বিক্রিতে ধস নেমেছে ৫৩ শতাংশ। 


কমেছে আনাগোনাও:
সাবওয়ে দিয়ে যাতায়াত করাও কমেছে। বড় শহরগুলিতে গত বছরের তুলনায় অন্তত ৬০ শতাংশ কমেছে সাবওয়ে দিয়ে যাতায়াত। পরিবহন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, কমে গিয়েছে সারা দেশে মালবাহী ট্রাকের যাতায়াত। সিমেন্ট, রাসায়নিক, বস্ত্রের মতো শিল্পে হ্রাস পেয়েছে উৎপাদনের পরিমাণ। প্রতিটি ক্ষেত্র থেকেই চাহিদা কমে যাওয়ার তথ্য এসেছে।

আরও পড়ুন: কাঁপছে আমেরিকা, 'বম্ব সাইক্লোনে'র ধাক্কায় পারদ -৪৫ ডিগ্রি