বেজিং: নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ গোটা বিশ্বে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কী করে কোভিড-১৯ এর হাত থেকে মুক্তি মিলবে, উত্তর নেই কারও কাছে। প্রতিষেধক ভ্যাকসিন বের করার গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কিন্তু কতদিনে সাফল্য মিলবে, বাজারে তা আসবে, তা জানা নেই। সব মিলিয়ে এক অনিশ্চয়তার আবহাওয়া। তার মধ্যেই চিনের উহান ইনস্টটিটিউট অব ভাইরোলজির ডেপুটি ডিরেক্টর শি ঝেঙ্গলি চিনা সরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে জানালেন, এখন যে ভাইরাসগুলির খোঁজ মিলছে, সেগুলি ‘হিমশৈলের চূড়া মাত্র’। বাদুড়ের শরীরে করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি ‘ব্যাট ওম্যান’ বলেও পরিচিত। অতিমারী, মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে সহযোগিতার ডাক দিয়েছেন তিনি।
ভাইরাস নিয়ে গবেষণা, বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের, সরকারকেও স্বচ্ছ থাকতে হবে, সহযোগিতার মনোভাব দেখাতে হবে বলে অভিমত জানিয়েছেন শি। বিজ্ঞানের রাজনীতিকরণ ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বলেছেন, এরপর ছোঁয়াচে, সংক্রমণমূলক রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে মানুষকে বাঁচাতে গেলে আমাদের আগে থেকে জন্তুজানোয়ারদের বহন করা এইসব অজানা, অচেনা ভাইরাস সম্পর্কে জেনে, গবেষণা করে আগাম সতর্কতা দিতে হবে। সিজিটিএনকে তিনি বলেছেন, ভাইরাসগুলি নিয়ে স্টাডি না করলে আরেকটা রোগের প্রাদুর্ভাব হতে পারে।
যে সময় শি এই সাক্ষাত্কার দিচ্ছেন, তখনই বেজিঙে শুরু হয়েছে ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস অর্থাত্ চিনের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বার্ষিক মিটিং। চিনের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পিও, দুজনেরই দাবি, সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সঙ্গে যোগ আছে উহানের গবেষণাগারের।
যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে চিন। শি বলেছেন, তিনি যেসব ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করেছেন, সেগুলির জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মানুষের শরীরে সংক্রমিত করোনাভাইরাসের জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের মিল নেই।
সোস্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, তিনি নিজের জীবন বাজি রেখে বলতে পারেন, এই অতিমারির সঙ্গে তাঁর গবেষণাগারের কোনও সম্পর্কই নেই। সিজিটিএনকে দেওয়া আলাদা সাক্ষাত্কারে উহান ইনস্টটিটিউট অব ভাইরোলজির ডিরেক্টর ওয়াংও ল্যাব থেকে ভাইরাস বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে, এমন ধারণাটা ‘পুরোপুরি অতিরঞ্জিত’ বলে জানিয়েছেন।