হায়দরাবাদ : করোনা পরিস্থিতিতে অনেক মানবিক মুখ দেখেছে দেশ। এরকমই আরও এক দৃষ্টান্ত দেখা গেল হায়দরাবাদে। সেখানকার এক চিকিৎসক মাত্র দশ টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন আর্থিভাবে পিছিয়েপড়া মানুষকে। ২০১৮ সাল থেকে নিজের হায়দরাবাদের ক্লিনিকে গরিবদের চিকিৎসা করছেন ভিক্টর ইম্যানুয়েল। যাঁদের সাদা রেশন কার্ড বা খাদ্য নিরাপত্তার কার্ড রয়েছে, তাঁদের কাছে এই ফি নেওয়া হয়। অন্যদিকে জওয়ানদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেন ভিক্টর।
সংবাদ সংস্থা ANI-কে তিনি জানান, অভাবিদের আয়ত্তের মধ্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এই ক্লিনিকটা খুলেছিলাম। সমাজের এমন কয়েকটা শ্রেণিকে আমরা বেছে নিয়েছি যারা আর্থিকভাবে বঞ্চিত এবং যাদের খাদ্য সুরক্ষার বা সাদা রেশন কার্ড আছে। এদের ছাড়াও, আমরা কৃষকদের, অনাথদের, অ্যাসিড-আক্রান্ত, বিশেষভাবে সক্ষম, এমনকী জওয়ান এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের একই পরিষেবা দিই।
ইম্যানুয়েল ডায়াবেটিস, হৃদরোগজনিত সমস্যা, স্নায়ুরোগজনিত সমস্যা এবং অন্যান্য সাধারণ রোগের চিকিৎসা করেন। যেখানে অনেক বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে কোভিড রোগীদের চিকৎসায় মোটা টাকা দাবি করা হচ্ছে, সেখানে মাত্র ১০ টাকায় চিকিৎসা করছেন এই চিকিৎসক। এমনকী তাঁদের প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং হোম আইসোলেশনের সাহায্যও দিচ্ছেন।
তিনি জানান, এই মুহূর্তে প্রতিদিন তাঁরা ১০০-র বেশি রোগীর চিকিৎসা করছেন। প্রাথমিকভাবে যখন সংক্রমণ বাড়ছিল, তখন ক্লিনিকে প্রতিদিন ১৪০-এর বেশি করোনা রোগী আসতেন। ভিক্টর বলেন, কখনো কখনো আমরা মাঝরাতে হাসপাতাল বন্ধ করতাম। গত এক বছরে এই ক্লিনিকে ২০ থেকে ২৫ হাজার করোনা রোগীর চিকিৎসা হয়েছে।
মানুষকে কম খরচে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার এই লক্ষের কারণ হিসাবে তিনি বলেন, আমি একবার একটি হাসপাতালের সামনের রাস্তায় এক মহিলাকে ভিক্ষা করতে দেখেছিলাম। ওই হাসপাতালের ICU-তে ভর্তি ছিলেন ওই মহিলার স্বামী। স্বামীর জন্য যাতে ওষুধ কিনে দিতে পারেন তাই সেখানে ভিক্ষা করছিলেন তিনি। এই ঘটনাটা আমরা জীবন পাল্টে দিয়েছে। সেই সময়ই আমি ঠিক করি, গরিব-অভাবিদের সেবা করব। আমার এই জার্নিতে সাহায্য করছেন আমরা বন্ধুরা এবং পরিবার। আমরা স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। সে-ও আমায় সাহায্য করছে।