নয়াদিল্লি: লভ ইউ জিন্দেগি। হাসপাতালের বিছানায় বসে তিনি। আর ওয়ার্ডেই চলছে জীবনের বেঁচে থাকার গান। সেই গানের সঙ্গে তাল মেলাচ্ছেন করোনা আক্রান্ত যুবতী। জীবনকে চেয়েছিলেন পুরোদমে উপভোগ করতে। দিনকয়েক আগে এমনই এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। করোনায় যখন কাঁপছে গোটা দেশ তখন করোনা আক্রান্তের এই মনোবল নতুন করে আশার আলো দেখিয়েছিল। কিন্তু বেশি সময় স্থায়ী হল না সেই আলো। করোনাই কেড়ে নিল বছর ৩০-এর ওই যুবতীর প্রাণ।
হাসপাতালের কোভিড এমার্জেন্সি ওয়ার্ড। বিছানায় আধ শোয়া অবস্থায় তিনি। মুখে রয়েছে অক্সিজেন মাস্ক। আর সঙ্গে বেঁচে থাকার অদম্য জেদ। ভরপুর প্রাণশক্তি নিয়েই একদিন জনপ্রিয় হিন্দি ছবির গানে তাল মিলিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন জীবনকে কতটা ভালবাসেন তিনি।
করোনায় ভয়ের ছবি দেখছে গোটা দেশ। কখনও নদীতে ভেসে উঠছে দেহ। কখনও আবার নিভছে না শ্মশানের আগুন। কখনও আবার অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। মৃত্যুর পর বাড়িতেই পড়ে রয়েছে করোনা আক্রান্তের দেহ। এমন একাধিক ছবি উঠে এসেছে দেশে দ্বিতীয়বার সংক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়তেই। এই আতঙ্কের আবহে নতুন করে বাঁচার ইচ্ছাশক্তি জুগিয়েছিলেন বছর ৩০-এর যুবতী। কিন্তু সেই জেদও হার মানল কোভিডের কাছে। গতকাল মৃত্যু হয় ওই যুবতীর।
গত ৮ মে নিজের ট্যুইটার অ্যকাউন্টে চিকিৎসক মনিকা সানগেহ যুবতীর কথা জানিয়ে প্রথম পোস্ট করেন। যেখানে তিনি লেখেন, ওঁর বয়স ৩০। কোভিড এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে। এখনও পর্যন্ত আইসিইউ বেডের ব্যবস্থা করা যায়নি। গত ১০ দিন ধরে এখানেই চিকিৎসাধীন তিনি। এনআইভি সাপোর্টে রয়েছেন। একইসঙ্গে রেমডেসিভির দেওয়া হচ্ছে, চলছে প্লাজমা থেরাপিও। উনি গান শুনতে চেয়েছিলন। আমি ওঁকে সেই অনুমতি দিয়েছি।
এরপর বেশ কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠছিলেন তরুণী। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। করোনা প্রাণ কাড়ল যুবতীর। বুধবার রাতে এই মৃত্যুর খবর জানালেন চিকিৎসক মনিকা সানগেহ নিজেই। রেমডেসিভির থেকে প্লাজমা থেরাপি এতকিছুর পরেও শেষরক্ষা হল না। জীবনের জয়গান গাইতে গাইতে জীবনকে ফাঁকি দিয়েই চলে গেলেন তিনি।