জলপাইগুড়ি: করোনা রোগীকে নিয়ে সারাদিন ঘুরেও কোনও বেড জোগাড় করতে পারেনি পরিবার। রাত দেড়টায় মৃত্যু হয়েছে ওই রোগীর। তারপরও হয়রানি। মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার কেউ নেই।  আজ সকাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে মৃতদেহ নিয়ে হাসপাতালের সামনে অপেক্ষায় মৃতের পরিবার। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়িতে। 


গতকাল সকালে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে পরীক্ষার পর এক মহিলার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।  পরিবারের দাবি, রোগীর অবস্থার ক্রমাগত অবনতি হতে থাকলেও কোনও হাসপাতালে বেড মেলেনি।  অবশেষে রোগীকে বাড়িতেই ফিরিয়ে নিয়ে যায় পরিবার।  গতকাল রাত দেড়টা নাগাদ মৃত্যু হয় রোগীর। তারপর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার কাউকে না পেয়ে আজ সকালে মৃতদেহ নিয়ে বিশ্ব বাংলা ক্রীড়াঙ্গণের কোভিড হাসপাতালে মৃতদেহ নিয়ে আসে পরিবার।  কিন্তু তারপরও কেউ মৃতদেহ নিয়ে যায়নি।  হাসপাতালের সামনেই  মৃতদেহ নিয়ে অপেক্ষায় বসেছিল পরিবার। 


এবিপি আনন্দে খবর সম্প্রচারের পর অবশেষে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।করোনায় মৃতের দেহ উদ্ধার করেন কোভিড হাসপাতালের কর্মীরা। এখন দেহ সৎকারের অপেক্ষায় বসে পরিবার।


করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর হাসপাতালে বেড না পেয়ে,অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে সারা দেশেজুড়েই। এ রাজ্যেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ ধরনের একাধিক অভিযোগ এর আগেও উঠে এসেছে। সেই তালিকাতেই সংযোজন হল জলপাইগুলির এই ঘটনা।


এর আগেই অমানবিকতার সাক্ষী থেকেছে কলকাতা। প্রথমে বিনা চিকিত্সায় করোনা আক্রান্ত মূমুর্ষু রোগীকে ফেরানোর অভিযোগ ওঠে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। তারপর অক্সিজেনের অভাবে বাড়িতেই মৃত্যুর মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।আর মৃত্যুর পর প্রায় ১২ ঘণ্টা বাড়িতেই পড়ে থাকে দেহ।পাতিপুকুর শ্রীপল্লি এলাকার বাসিন্দা প্রাক্তন শিক্ষক সুদীন মুখোপাধ্যায়ের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে শনিবার। 


পরিবারের দাবি, রবিবার অবস্থার অবনতি হলে বারবার স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় লেকটাউন থানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন  তাঁরা। সাহায্য না পাওয়ায় আত্মীয়রাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যান। 


পরিবারের অভিযোগ, বিনা চিকিত্সায় ফিরিয়ে দেওয়া তাঁকে। এরপর রবিবার রাত ২টো ২০ নাগাদ বাড়িতেই মৃত্যু হয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের! 
মৃত্যুর পরও সেই ভোগান্তি!স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের স্ত্রী ও মেয়েও করোনা আক্রান্ত! এই পরিস্থিতিতে মৃতদেহ শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যেতে বারবার পুরসভা ও স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ আসেননি বলে অভিযোগ! শেষমেশ সোমবার দুপুর তিনটে নাগাদ বৃদ্ধের মৃতদেহ সত্কারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।