লখনউ : ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাবে গত ১০ দিনে ৬ সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে লখনউয়ে। করোনার উপসর্গ জানার পর হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে সেখানে তাঁদের বেড পেতে সমস্যা হয়। এদিকে ছয় সাংবাদিকের মৃত্যুর পর হাসপাতালে সাংবাদিকদের জন্য বেড সংরক্ষণের দাবি তুলেছে জার্নালিস্ট ইউনিয়ন। পাশাপাশি রাজ্য সরকার যাতে সাংবাদিকদের করোনা যোদ্ধার মর্যাদা দেয়, সেই দাবিও তোলা হয়েছে সংগঠনের তরফে।

রাজ্যে ক্রমশ বেড়ে চলেছে করোনা রোগীর সংখ্যা। অবস্থা বুঝে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। তা সত্ত্বেও বাগে আনা যাচ্ছে না সংক্রমণ। এদিকে খবর সংগ্রহের তাগিদে বাইরে বেরোতে হচ্ছে সাংবাদিকদের। ফলে কোভিড হানার অন্যতম শিকার হচ্ছেন এই পেশার মানুষ।

গত ১৪ এপ্রিল সময়মতো ভেন্টিলেটর না পেয়ে মৃত্যু হয়েছে উর্দু সংবাদপত্র 'জদিদ অমল'-এর সাংবাদিক সচ্চিদানন্দ গুপ্তর। একই ঘটনা ঘটে বর্ষীয়ান সাংবাদিক বিনয় শ্রীবাস্তবের ক্ষেত্রে। অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ায় যোগী আদিত্যনাথ এবং তাঁর মিডিয়া উপদেষ্টাকে বার বার টুইট করে সাহায্য চান তিনি।



একই পরিস্থিতির শিকার হন 'পায়োনিয়ার'-এর পলিটিক্যাল এডিটর তভিসি শ্রীবাস্তব। শ্বাসকষ্ট থাকলেও লখনউয়ে কোনও হাসপাতালে ভর্তি হতে পারছিলেন না তিনি। পরে ১৮ এপ্রিল তাঁর জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেন সহকর্মীরা। শেষে দিল্লিতে তাঁর এক সহকর্মী কিংস জর্জ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে তাঁকে ভর্তি করান। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। ভর্তির কিছু ঘণ্টা পর মারা যান ওই সাংবাদিক।

২দিন আগেই রাজ্যে কোভিডের শিকার হন আরও এক সাংবাদিক পবন মিশ্র। পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ভেন্টিলেটর সাপোর্টের প্রয়োজন ছিল পবনের। কিন্তু তা পাননি তিনি। একইভাবে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ৩২ বছরের অঙ্কিত শুক্লা। কোভিডের থাবা থেকে বাদ পড়েননি ইউপি অ্যাক্রিডিটেড জার্নালিস্ট কমিটির সদ্য নির্বাচিত সদস্য প্রমোদ শ্রীবাস্তব। গত মাসেই ৪৮ বছরের প্রমোদের মৃত্যু হয়। ২১ মার্চ ছিল জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশেনর নির্বাচন।

পরিসংখ্যান বলছে, সাংবাদিকদের পরিবারের কমপক্ষে ২০ জন করোনায় আক্রান্ত। যা চিন্তা বাড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই যোগী সরকারের কাছে সাংবাদিকদের বিষয়ে আবেদন জানিয়েছে জার্নালিস্ট ইউনিয়ন। অবিলম্বে সাংবাদিকদের কোভিড যোদ্ধা ঘোষণা করে তাদের জন্য বেড সংরক্ষণ করার কথা বলেছেন তাঁরা। ইউপি স্টেট অ্যাক্রিডিটেড করেসপন্ডেন্স কমিটি'র প্রেসিডেন্ট হেমন্ত তিওয়ারি জানান, যোগী সরকারের কাছে মৃত সাংবাদিকদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন তাঁরা।