মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: ভ্যাকসিনের অভাবে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে বন্ধ হয়ে গেল করোনা টিকাকরণ কর্মসূচি। কবে ভ্যাকসিন আসবে সেই সম্পর্কেও কোনওরকম তথ্য দিতে পারল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


দিন দুয়েক আগে প্রায় ২ হাজার মতো ভ্যাকসিন এসেছিল দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। এর আগে এসেছিল ৫০০-র মতো ভ্যাকসিন। প্রতিদিন তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। সংখ্যাটা সাড়ে ছশোতেও পৌঁছোয় কোনও কোনও দিন। কিন্তু ভ্যাকসিনের জোগান ঠিকঠাক না থাকায় শনিবার থেকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে করোনা  ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হলো। আর এতে রীতিমতো দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ।


এখানেই শেষ নয়, অক্সিজেনের জোগানও আগামী দিনে আরও কমতে চলেছে বলে খবর। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের বাইরে থাকা অ্যাম্বুলেন্স চালকরা এমনই আশঙ্কার কথা বলছেন। এখন ২০০ প্রেসারের একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের দাম পড়ে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকার মতো, পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে এর দাম বাড়তে চলেছে বলে তাঁদের জানিয়ে দিয়েছে সরবরাহকারী সংস্থাগুলি।


এবিষয়ে রাজ্য সরকারকে তোপ দাগলেন বর্ধমান জেলা সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার যথেষ্ট পরিমাণ ভ্যাকসিন পাঠাচ্ছে। কিন্তু ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে তৃণমূল ইচ্ছে করে  কৃত্রিম অভাব তৈরি করে রেখে দিয়েছে। আর যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।  অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সহ সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় পাল্টা কটাক্ষ করেন।  


এইদিকে গোটা পরিস্থিতিতে এখন বেশ আতঙ্কে শহর দুর্গাপুরের মানুষ। বেসরকারি হাসপাতলগুলিতে আর করোনা বেড নেই। তাদের বেডের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসনের তরফে অনুরোধ জানানো হয়েছে। দিন তিনেক আগে  দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে তড়িঘড়ি ২১ বেডের কোভিড বিভাগ খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানেও বেডের থেকে রোগীর সংখ্যা বেশী হয়ে যাচ্ছ। সব মিলিয়ে  দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ৩০ থেকে ৩৫জনের মতো চিকিৎসক রয়েছেন যারা রোটেশনের ভিত্তিতে কোভিড বিভাগে কাজ করছেন। আর ভ্যাকসিন আর বেড না পেয়ে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষের  জনরোষ যেভাবে সরকারি হাসপাতালের ওপর আছড়ে পড়ছে তাতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন চিকিৎসকরাও।