লন্ডন: রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তাঁদের তৈরি করোনা টিকার তাঁরা মানব শরীরে সফল পরীক্ষা সেরেছেন। আরও অন্তত ৫টি সংস্থা করোনা টিকা তৈরির একেবারে শেষ ধাপে পৌঁছে গিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, বছর শেষের আগেই টিকা চলে আসবে বাজারে, ফলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা হয়তো অসম্ভব হবে না। কিন্তু নতুন এই গবেষণা যাবতীয় আশা নস্যাৎ করে দিতে পারে।

কিংস কলেজ লন্ডনের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, টিকার ফলে শরীরে যে করোনা প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হবে তা ক্ষণস্থায়ী। যাঁরা করোনা থেকে সেরে উঠেছেন মাত্র তিন মাস পর থেকেই তাঁদের রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির ক্ষমতা শেষ হয়ে যেতে পারে। যদি এই গবেষণা সত্যি হয়, তা হলে টিকা নিয়েও নিস্তার নেই, করোনা আবার ফিরে আসতে পারে। সাধারণ সর্দিকাশির মত করোনাও চলতে থাকবে বছর বছর ধরে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা ৯০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর শারীরিক নমুনা পরীক্ষা করেছেন। এঁরা সকলেই করোনা থেকে সেরে উঠেছেন। দেখা যাচ্ছে, সংক্রমণ কেটে যাওয়ার ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত এঁদের শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা শীর্ষে ছিল, তারপর ধীরে ধীরে কমে শেষটায় পুরো উধাও হয়ে যাচ্ছে। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ৬০ শতাংশ রোগীর শরীরে সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায়ে ভাল অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। তাঁদের মধ্যে মাত্র ১৭ শতাংশের শরীরে সেই পরিমাণ অ্যান্টিবডি সংক্রমণের ৩ মাস পরেও থাকে। তারপর অ্যান্টিবডি কখন পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, তা নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির শরীর স্বাস্থ্যের ওপর।

প্রধান গবেষক কেটি ডুরেস বলেছেন, মানুষের শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু অল্প সময়ে তা কমে যাচ্ছে। শরীরে কতটা অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল, তা ঠিক করে দিচ্ছে, ওই অ্যান্টিবডি কতদিন থাকবে। তাঁর মতে, যদি অ্যান্টিবডি এভাবেই কমে যেতে থাকে, তবে বারবার ফিরে আসবে করোনা, কোনও টিকাই তার বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি লড়াইয়ের ক্ষমতা দেবে না। ইংল্যান্ডেরই একদল বিজ্ঞানী কয়েক মাস আগে এমনই একটি গবেষণা করেন। তাঁরাও বলে, করোনা বছর বছর আসতে পারে, জ্বর, সর্দি কাশির মত, সম্ভবত আর তা যাবেই না।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-অ্যাস্ট্রাজেনেকা যে করোনা টিকা তৈরি করছে, তার গবেষণায় বলা হয়েছে. এই টিকা অন্তত ১ বছরের জন্য করোনা প্রতিরোধী ক্ষমতা দেবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও শক্তিশালী টিকা জরুরি, ডুরেস বলেছেন।