কাশির সিরাপ খেয়ে শিশুমৃত্যুর অভিযোগে তোলপাড় দেশ। এরই মধ্যে রবিবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মিটিংয়ের পর দেশের সব ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাদের সংশোধিত বিধি ( Revised Schedule M ) মেনে চলার বিষয়ে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, বিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগেই পরপর শিশু মৃত্যুর ঘটনার পর অ্যাডভাইসরি জারি করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক জানায় ২ বছরের কম বয়সের শিশুদের কাফ সিরাপ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব পুণ্য সলিলা শ্রীবাস্তবের সভাপতিত্বে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে একটি উচ্চ-স্তরের বৈঠক হয় রবিবার। ওষুধের মানের বিষয়ে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হচ্ছে । বিশেষত শিশুদের কাশির সিরাপ তৈরি ও দেওয়ার বিষয়ে আরও সতর্ক হতে হবে বলে বলা হয়েছে বৈঠকে।
বৈঠকে বলা হয়েছে, কাশির সিরাপের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ওষুধ ব্যবহারের আগে যথেষ্ট সতর্ক হতে হবে। শিশুদের কাফ সিরাপ প্রেসক্রাইব করার আগেও সতর্ক হতে হবে। ওষুধের গুণগত মান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং মহারাষ্ট্রে কাশির সিরাপ খেয়ে পর পর শিশুমৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। তারপরই এই কড়া পদক্ষেপ। মধ্যপ্রদেশ ইতিমধ্যেই কোল্ডরিফ নামে ওই কাশির সিরাপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
মিটিংয়ে রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে,ন শিশুদের মধ্যে কাশির সিরাপের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার করতে হবে। বেশিরভাগ কাশি নিজেই সেরে যায়। এর জন্য ওষুধপত্রের প্রয়োজন হয় না। শিশুদের ক্ষেত্রে কাশির সিরাপের ব্যবহার যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গেই করতে হবে।
চিকিৎসককে গ্রেফতার
মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায় যে চিকিৎসকের প্রেসক্রাইব করা ওষুধ খেয়ে শিশুমৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ, তাঁকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ব্লক মেডিক্যাল অফিসারের অভিযোগের ভিত্তিতে, অভিযুক্ত চিকিৎসক প্রবীণ সোনির বিরুদ্ধে BNS-এর দুটি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তামিলনাড়ু ও কেরলে 'কোল্ডরিফ' কাফ সিরাপ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তামিলনাড়ুর ড্রাগ কন্ট্রোলের দেওয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, কাঞ্চিপুরমের শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি ওই সিরাপে বিষাক্ত পদার্থ পাওয়া গেছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। রাজস্থানেও ওই কাফ সিরাপ খেয়ে ২ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। ওষুধ নির্মাণকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের করা হয়েছে।