লন্ডন: করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে গোটা বিশ্ব। পিছিয়ে নেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কোভিশিল্ড টিকার এখন বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। এবার আর এক ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেমব্রিজও হাত লাগাল করোনা টিকা তৈরিতে।


কেমব্রিজের বিজ্ঞানীরা এমন একটি টিকা তৈরির চেষ্টা করছেন, যা শুধু কোভিড-১৯ নয়, ভবিষ্যতের যাবতীয় করোনাভাইরাসকে পরাস্ত করতে পারে। তাঁদের টিকার গতকাল থেকে শুরু হয়েছে প্রি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। টিকার নাম রাখা হয়েছে ডিআইওএস-কোভ্যাক্স২। করোনাভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্স কাজে লাগিয়ে তৈরি হয়েছে এই টিকা। ৩ডি কম্পিউটার মডেলিং ব্যবহার করে জীবাণুর মিউটেশন ও ভ্যারিয়েশন বোঝা হয়েছে। এই টিকাটি নিয়ে অর্থ বিনিয়োগকারী ও সাধারণ মানুষ- উভয়ের মধ্যেই আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এ জন্য প্রায় ১.৯ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ করেছে ইংল্যান্ড সরকার।

কেমব্রিজের ল্যাবরেটরি অফ ভাইরাল জুনোটিক্সের প্রধান জোনাথন হিন বলেছেন, তাঁরা আত্মবিশ্বাসী, তাঁদের তৈরি টিকা ভবিষ্যতেও এ ধরনের সংক্রমণ ও অতিমারীতে কাজে লাগবে। সার্স, মার্স ও অন্যান্য করোনা জীবাণু, যেগুলি জীবজন্তু থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়, তা রুখতে তৈরি হয়েছে এই টিকা।

করোনা জীবাণু যেভাবে  মানব শরীরে নিজের প্রতিলিপি তৈরি করে, তা যাতে বন্ধ করা যায়, তাই এই টিকার মুখ্য উদ্দেশ্য। এর ফলে শরীরে এই দ্রুত সংক্রমণ বন্ধ হবে, অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হবে না।

বিজ্ঞানীদের এই দলটি সিন্থেটিক ডিএনএ ডিজাইন নামে একটি নতুন ভ্যাকসিন টেকনোলজি ব্যবহার করছে। তাঁদের বিশ্বাস, এটি অন্যান্য টেকনোলজির থেকে ভাল, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা কম। এখন যে করোনা টিকাগুলির ওপর কাজ চলছে বেশিরভাগেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অত্যন্ত বেশি দেখা যাচ্ছে বলে খবর। তাছাড়া বিজ্ঞানীদের দাবি, অন্যান্য টিকার থেকে তাঁদের টিকা অপেক্ষাকৃত সস্তাও হবে।

অন্যান্য টিকার মত এই টিকা ফ্রিজে রাখার দরকার নেই, শুকনো গুঁড়ো হিসেবে সংরক্ষণ করা যাবে এই সিন্থেটিক ভ্যাকসিন। এর ফলে এটি তৈরি, সরবরাহ এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ সবই সহজ হবে। এ বছরের শেষে শুরু হবে মানব দেহে এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল।