বেজিং: ২০ জানুয়ারি চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং করোনাভাইরাস সম্পর্কে দেশবাসীকে অবহিত করেন। তার ৬ দিন আগেই তাঁদের কাছে এই সংক্রমণের খবর এসে গিয়েছিল, আর এই ৬ দিনে ৩,০০০-এর বেশি চিনা করোনায় আক্রান্ত হন। করোনাভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র ইউহানে চান্দ্র নববর্ষ উপলক্ষ্যে বিশাল জনসমাগম হয়, এতে যোগ দেন হাজার হাজার মানুষ। এই সমাগম হয় ১৪ জানুয়ারি, চিন সরকার তখন ভয়ানক ছোঁয়াচে করোনার মারণশক্তি সম্পর্কে ভালভাবে জানে। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি।

এমনই দাবি করেছে একটি সংবাদসংস্থা রিপোর্ট।  ২৩ জানুয়ারি ইউহান লকডাউন করে দেওয়া হলেও তাদের হাতে থাকা নথিপত্র ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথাবার্তার ভিত্তিতে তারা বলেছে, চাইলে চিন সরকার এই সংক্রমণ ঠেকাতে আগেই ব্যবস্থা নিতে পারত। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজিস্ট জুও ফেং ঝ্যাং বলেছেন, যদি ৬ দিন আগে চিন ব্যবস্থা নিত, রোগীর সংখ্যা কম হত, চিকিৎসা ব্যবস্থারও অপ্রতুলতা হত না। হয়তো এড়ানো যেত ইউহানের মহামারী।

চিন সরকার শুধু যে সময়মত ব্যবস্থা নেয়নি, তা নয়, তাদের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল স্থানীয় আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে কোনও আক্রান্তের ব্যাপারেই তথ্য নথিবদ্ধ করেনি। যদিও ততদিনে শয়ে শয়ে রোগীতে ইউহানের হাসপাতালগুলি ভরে গিয়েছে। কিন্তু চিনের তথ্যপ্রকাশে কড়াকড়ি, তাদের কূটনৈতিক নজরদারি ও উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকদের কাছে ‘খারাপ খবর’ পৌঁছতে অনীহা প্রথম স্তরেই রোগের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ।  বিষয়টি যাঁরা প্রথম জনসমক্ষে আনেন, সেই ৮ চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও বেজিং ব্যবস্থা নেয়, বলে, তাঁরা গুজব ছড়াচ্ছেন। এর ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ইউহানের চিকিৎসক সম্প্রদায়।

১৩ জানুয়ারি প্রতিবেশী থাইল্যান্ডেও করোনা আক্রান্ত ধরা পড়ায় প্রথমবার সতর্ক হয় বেজিং। করোনা রুখতে দেশজুড়ে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা হয়, পরীক্ষার জন্য কিট বিলি হয়, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়, দ্রুত পরীক্ষা করতে। অথচ ২০ তারিখ পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে কিছু বলার কথা তাদের মনেও হয়নি। ফলে রোগ ছড়িয়ে যায় দ্রুত।