লন্ডন: ভারত সহ বিশ্বের একাধিক দেশে শুরু হয়েছে করোনা টিকাকরণ। এই আবহে দেখা দিয়েছে ভাইরাসের নতুন স্ট্রেন। যার মূল উৎস ব্রিটেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। যদিও ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি দাবি করেছে, এই স্ট্রেনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সক্ষম তারা।


এই পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন আক্রান্ত হওয়ার জেরে এমন নতুন শারীরিক সমস্যার কথা তাঁরা জানতে পারছেন, যা আগে প্রকাশ্যে আসেনি। সম্প্রতি, করোনায় মৃত এক মার্কিন নাগরিকের কেস রিপোর্ট দেখে চমকে উঠেছেন বিজ্ঞানীরা।

জানা গিয়েছে, ৪৫ বছর বয়সি এক ব্যক্তিকে গত বছর ভর্তি করা হয় বস্টনের ব্রিঘাম এন্ড উইমেনস হসপিটালে। পরে তাঁর কোভিড-১৯ রিপোর্ট পজিটিভ আসে। দীর্ঘ কয়েকমাস লড়াই শেষ হয় ১৫৪ দিনের মাথায়। মৃত্যু হয় তাঁর। আর এই মৃত্যু নিয়ে গবেষণা শুরু করেন বিজ্ঞানীরা।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিজ্ঞানীরা দেখেন ১৫৪ দিন টানা এক ব্যক্তি কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত ছিলেন। ওই সময়কালে ভাইরাসটি তাঁর শরীরের মধ্যে একাধিকবার মিউটেশনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে।

বিজ্ঞানীদের দাবি, ওই ব্যক্তি এক বিরল রোগে আক্রান্ত হন। যার নাম 'অ্যান্টি-ফসফোলিড সিন্ড্রোম'। বিজ্ঞানীদের দাবি, এর ফলে, ওই ব্যক্তির রোগ-প্রতিরোধ সিস্টেম শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকেই আক্রমণ করতে শুরু করে। এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই চমকে ওঠেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীরা দেখেন, ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন ছিল এই মিউটেশনের কেন্দ্রবিন্দু। মিউটেশন হওয়া ভাইরাস ক্ষতিকর হয়ে উঠছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের একাংশের বক্তব্য, দেখা যাচ্ছে এই স্ট্রেনে আক্রান্ত হওয়ার পর শারীরিক সমস্যা অনেক দিন পর্যন্ত থাকছে।

উল্লেখ্য, গত বছর থেকে ব্রিটেনে লাগামহীন করোনা সংক্রমণ। ভাইরাসের নতুন স্ট্রেন তথা প্রজাতি ছড়িয়ে পড়ছে সারা ব্রিটেন সহ বিশ্বে। এই পরিস্থিতিতে সিল করে দেওয়া হয় সব সীমান্ত। বেলজিয়াম, ইতালি, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, কানাডার মতো দেশ বিমান পরিষেবা বাতিল করে দেয়। লকডাউন জারি করাও হয়। বিশেষজ্ঞরা জানান, এই নতুন স্ট্রেনে করোনা ছড়াতে পারে খুবই দ্রুত হারে। ভাইরাসের অন্য প্রজাতির তুলনায়, এই ৭০ শতাংশ ক্ষতিকর। আর তাতে ৬০ শতাংশ সংক্রমণ বেড়েছে লন্ডনে।

প্রসঙ্গত, বিশ্বে করোনায় দৈনিক মৃত্যু ও সংক্রমণ কমল। সেইসঙ্গে কমেছে দৈনিক সুস্থতার সংখ্যাও। করোনায় এখনও পর্যন্ত বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে ২২ লক্ষ ৬৪ হাজার ১১৮ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৪২ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪২৬। এরই মধ্যে করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়েছেন ৫ কোটি ৭৯ লক্ষ ৩১ হাজার ৭৩৪ জন। বিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৭৭৩ জনের। একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৩৪ হাজার ১২। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ লক্ষ ১১ হাজার ৭০৮ জন।