মহিলার নাম রাজিয়া বেগম, বয়স ৪৮। হায়দরাবাদ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে নিজামাবাদের বোধানে একটি সরকারি স্কুলের তিনি প্রধান শিক্ষিকা। ১৫ বছর আগে রাজিয়া স্বামীকে হারিয়েছেন, সংসার বলতে ২ ছেলে, একজন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছে, আর ছোট নিজামুদ্দিন, বয়স ১৯, ডাক্তারি প্রবেশিকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১২ মার্চ বন্ধুকে পৌঁছে দিতে নেল্লোরের রহমতাবাদ যায় সে। এর মধ্যে শুরু হয় লকডাউন, নিজামুদ্দিন নেল্লোরেই আটকে পড়ে। মাকে ফোন করে সে বলেছিল, যেভাবে হোক, বাড়ি ফিরতে চায়। শুনে রাজিয়া ঠিক করেন, ছেলেকে ফিরিয়ে আনবেন তিনি। পুলিশের অনুমতি নিয়ে সোমবার সকালে শুরু হয় তাঁর যাত্রা। ছেলেকে নিয়ে যখন ফেরেন, তখন বুধবার সন্ধে।
রাজিয়া জানিয়েছেন, বড় ছেলেকে পাঠানোর সাহস পাননি তিনি, কারণ পুলিশ ভাবতে পারে, সে বাইক নিয়ে ফাঁকা রাস্তায় ফুর্তি করতে বেরিয়েছে, গ্রেফতার করতে পারে। তাই দায়িত্ব তুলে নেন নিজের কাঁধে। প্রথমে গাড়ি নেওয়ার কথা ভাবলেও পরে ঠিক করেন, নিজের টু হুইলারেই যাবেন। কয়েকটা রুটি সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। রাতে ভয় করত, কোনও গাড়িঘোড়া চলত না, ধুধু রাস্তায় মানুষেরও দেখা পাওয়া যেত না। কিন্তু থামেননি তিনি। রাজিয়া রওনা দেন ৬ তারিখ সকালে, নেল্লোর পৌঁছন পরদিন বিকেলে। সেদিনই শুরু হয় নিজামাবাদের দিকে তাঁর যাত্রা, বুধবার সন্ধেয় সপুত্র পৌঁছন বোধান।