নয়াদিল্লি : দ্বিতীয় ঢেউয়ের রেশই এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই আসতে চলেছে তৃতীয় ঢেউ। করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ ঠিক কবে আছড়ে পড়তে চলেছে, তা নিয়ে মানুষের মনে আশঙ্কা এবং প্রশ্নের সীমা নেই। করোনার তৃতীয় ঢেউ কতটা ভয়ঙ্কর হবে, কাদের সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি রয়েছে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পাশাপাশি আর কী কী করলে করোনার তৃতীয় ঢেউকে প্রতিহত করা সম্ভব ইত্যাদি নানা প্রশ্ন মনের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে একটি তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেই তথ্য অনুযায়ী, অগাস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমাদের দেশে আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। সেপ্টেম্বরে এর মাত্রা আরও বাড়বে।
সম্প্রতি এসবিআই রিসার্চের প্রকাশিত 'কোভিড ১৯, দ্য রেস টু ফিনিশিং লাইন' প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, টিকাকরণই একমাত্র পথ এই মারণ রোগের হাত থেকে বাঁচার। এর পাশাপাশি আমাদের এটাও মনে রাখা দরকার যে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকে প্রায় ১.৭ গুণ বেশি মারাত্মক হতে চলেছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। প্রসঙ্গত, আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত ৪.৬ শতাংশ মানুষের সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়েছে। টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ২০.৮ শতাংশ মানুষ। যদি অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে আমাদের দেশ টিকাকরণের দিক থেকে এখনও অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। যেমন, আমেরিকায় টিকাকরণ হয়েছে ৪৭.১ শতাংশ মানুষের। ইংল্যান্ডে ৪৮.৭ শতাংশ মানুষের। ইজরায়েলে ৫৯.৮ শতাংশের। স্পেনে ৩৮.৫ শতাংশের। ফ্রান্সে ৩১.২ শতাংশ মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গ্রুপ চিফ ইকোনমিক অ্যাডভাইজার সৌম্যকান্তি ঘোষ বলেন, "২১ অগাস্ট থেকে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের তীব্রতা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আশঙ্কার আরও একটা বড় বিষয় হচ্ছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ শেষ হওয়ার আগেই আছড়ে পড়তে পারে তৃতীয় ঢেউ।"
জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত ১২টি রাজ্য থেকে করোনার ডেল্টা প্লাস প্রজাতির ৫১টি কেস শনাক্ত হয়েছে। যার বৃদ্ধি জুন মাসে বেশি ছিল। এই প্রসঙ্গে সৌম্যকান্তি ঘোষ আরও জানাচ্ছেন যে, 'করোনায় মৃত্যুর হাত থেকে বা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার একটাই রাস্তা। আর সেটা হল টিকাকরণ।' প্রসঙ্গত, ভারতে প্রত্যেকদিন প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজস্থান, দিল্লি, হিমাচলপ্রদেশ, কেরল এবং উত্তরাখণ্ডে ৬০ বছরের বেশি বয়স্কদের বেশিরভাগকেই করোনার দুটি ডোজ দেওয়া হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে তামিলনাড়ু, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ডে ৪৫ বছরের বেশি বয়স্কদের টিকাকরণের হার ততটাও বাড়েনি। এই সমস্ত রাজ্যে টিকাকরণের হার বাড়ানোর দরকার এখনই।