লন্ডন : শারীরিক, অর্থনৈতিকভাবে বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে করোনা। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, কোভিডের মানসিক চাপে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে অনেকেরই।


করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চিন্তা বাড়িয়েছে বিশ্বের। এই ওয়েভেই মৃতের সংখ্যা বেড়েছে সবথেকে বেশি। গবেষকরা বলছেন, সুস্থ হয়ে ওঠার পরও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন রোগীরা। সবথেকে খারাপ অবস্থা হচ্ছে তাঁদের ফুসফুসের। অনেক ক্ষেত্রে তিনমাস এমনকী ৯ মাস পরও সুস্থ হওয়া রোগীর ফুসফুসের অবস্থা স্বাভাবিক হচ্ছে না। এবার শারীরিকের সঙ্গে চিন্তা বাড়াচ্ছে মানসিক সমস্যা। 


সম্প্রতি কোভিড পরিস্থিতিতে কোন কোন চাপ মানুষকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা জোগায়, তা নিয়ে একটি গবেষণা করে সোয়ানসি ইউনিভার্সিটি, কার্ডিফ ইউনিভার্সিটি ও ওয়েলসের এনএইচএস-এর গবেষকরা। যেখানে ১২,০০০ লোকের ওপর নজর রাখেন গবেষকরা। কিছু স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে ব্রিটেনের প্রথম লকডাউনের অভিজ্ঞতা জানাতে বলা হয় তাঁদের। পরবর্তীকালে সেই গবেষণাপত্রই 'আর্কাইভস অফ সুইসাইড রিসার্চ'-এ স্থান পায়।


গবেষণায় দেখা যায়, সামাজিক দূরত্ব, পারিবারিক সমস্যা, সম্পর্কের সমস্যা, প্রাচুর্যের অভাব, অর্থনৈতিক সমস্যার ফলে মানুষের আত্মহত্যার চিন্তা এসেছে। তবে সবার ক্ষেত্রেই এই ধরনের প্রবণতা দেখা যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, হাসিখুশি থাকেন ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তা কম এমন ব্যক্তিদের মধ্যে লকডাউন সেরকম মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি।


এ প্রসঙ্গে সোয়নসি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নিকোলা গ্রে বলেন, ''এই গবেষণার মাধ্যমে কোন মানসিক চাপ মানুষকে আত্মহত্যার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, তা বুঝতে চেষ্টা করি আমরা। হতে পারে, এর মধ্যে লকডাউনের পর অনেক চাপ মানুষের কমে গেছে। হয়ত কিছু চাপ ভবিষ্যতেও থেকে যাবে।''


আত্মহত্যার প্রবণতার বিষয়ে কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির রবার্ট স্নোডেন বলেন, ''অনেক ক্ষেত্রেই এই ধরনের চাপ সামলানো খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই আমাদের উচিত সমাজের কথা চিন্তা করে এই সময় মানসিক চাপে থাকা মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো। যাতে এই পরিস্থিতি থেকে নিজেদের সামলে উঠতে পারেন তাঁরা।"