কলকাতা: চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় বিপযর্য়। আরব সাগরের বুকে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ক্রমশ এগিয়ে আসছে গুজরাত উপকূল লক্ষ্য করে। আজই রাতে ল্যান্ডফল হওয়ার কথা ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের। তার আগেই গুজরাতে শুরু হয়েছে বৃষ্টির। বেশ কিছু এলাকায় শুরু হয়েছে ঝোড়ো হাওয়ার দাপটও।
শুধু বিপর্যয় নয়। একাধিক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে ভারতের একাধিক উপকূলে। প্রতিবছরই কোনও না কোনও ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকূটি দেখা যায় পূর্ব বা পশ্চিম উপকূলে। মূলত বঙ্গোপসাগরেরই একাধিক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটেওরোলজির তরফে একটি রিপোর্টে জানা যায় আরব সাগরের তুলনায় বঙ্গোপসাগরে তুলনায় বেশি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। আরব সাগর তুলনায় অনেকটাই শান্ত। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই ছবিটাও বদলে গিয়েছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা ক্রমশ বাড়ছে। একই চিত্র আরব সাগরেরও। ফলে এখন এখানেও প্রায়শই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে, সমুদ্রে ঝড়ের একটি বড় কারণ বৈশ্বিক উষ্ণতা। আইপিসিসির এক প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে গ্রিনহাউস গ্যাসের কারণে ক্রমবর্ধমান তাপের 93 শতাংশই মহাসাগর শোষণ করে। যার কারণে প্রতি বছর সাগরের তাপমাত্রাও বাড়ছে। এমতাবস্থায় বিপরজয়ের মতো গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা এখানেও বৃদ্ধি পায়।
বিপরজয়ের মতো ঘূর্ণিঝড় কেবল মহাসাগরের উষ্ণ অংশে তৈরি হয়। এই অংশের গড় তাপমাত্রা 28 ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে, ঝড় তাপ থেকে শক্তি সংগ্রহ করে এবং সমুদ্র থেকে আর্দ্রতা টেনে নেয়। যার পরে, পর্যাপ্ত শক্তি থাকার পরে, তারা পরিণত হওয়ার পরে এগিয়ে যেতে শুরু করে। এরপর তারা পৃথিবীতে এসে বিপর্যয় সৃষ্টি করে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন যে ভারতে আবহাওয়া সংক্রান্ত বিপর্যয়ের তথ্য ইতিমধ্যেই সঠিকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণে ত্রাণ ও দুর্যোগ উদ্ধারকারী দল সময়মতো মানুষকে নিরাপদ করে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছে, বিশ্ব উষ্ণায়নই আসলে ঘনঘন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির কারণ। IPCC রিপোর্ট জানাচ্ছে, সারা বিশ্বে গ্রিন হাউস গ্যাস বৃদ্ধির কারণে উষ্ণতা বাড়ছে। সেই তাপের ৯৩ শতাংশই শোষণ করছে সমুদ্র। এর ফলেই প্রতিবছরই সমুদ্রের উষ্ণতা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড় তৈরির পরিস্থিতিও তৈরি হচ্ছে ঘন ঘন। বিপর্যয়ের মতো ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় সমুদ্রপৃষ্ঠ উষ্ণ হলেই। এই এলাকায় গড় তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকে। এই পরিস্থিতিতে সমুদ্রতল থেকেই উষ্ণতা শুষে নেয়, তারই সঙ্গে আর্দ্রতাও শুষে নিয়ে তৈরি হয় ঘূর্ণিঝড়। সমুদ্রের উপর যতক্ষণ থাকে ততক্ষণই শক্তি সঞ্চয় করতে পারে ঘূর্ণিঝড়। তারপরেই ক্রমশ অগ্রগতি হয় ঝড়ের। শেষ পর্যন্ত উপকূলের কাছে এসেছে আছড়ে পড়ে। ল্যান্ডফলের মুহূর্তে তীব্র শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়লেও, ভূমিভাগে ঢোকার পর থেকেই ক্রমশ শক্তি হারাতে থাকে ঘূর্ণিঝড়। তারপর একসময় শক্তি কমে পরিণত হয় অতি গভীর নিম্নচাপ বা গভীর নিম্নচাপে।
আরও পড়ুন: একের বেশি ফর্ম ১৬ থাকলে কীভাবে ফাইল করবেন ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ? রইল সহজ সমাধান