অনির্বাণ বিশ্বাস, ভদ্রক (ওড়িশা) : আশঙ্কা ছিলই। সেইমতোই তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় 'দানা।' ওড়িশার ভদ্রকে তীব্র বেগে ঝড়, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৃষ্টি। জনমানবশূন্য রাস্তাঘাটে কার্যত ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে 'দানা'। ভদ্রক জেলায় ৮টি ব্লক রয়েছে। তার মধ্যে ২টি নিচু এলাকা। গতকাল ১১টা নাগাদ ল্যান্ডফল হয় এবং পরে রাত ২টো নাগাদ সমুদ্রে হাই টাইডের জেরে নিচু এলাকায় জল ঢুকে গিয়েছে। ফলে, ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে স্থানীয় সামুদ্রিক অভয়ারণ্যে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভদ্রক, বালেশ্বর, পুরী-সহ ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি শোচনীয়। স্থলভাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া ঝোড়ো হাওয়া তীব্র গতিতে ভিতরকণিকার দিকে এগোচ্ছে। ধামারায় ইতিমধ্যেই তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড়। ভিতরকণিকার পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ৮০ হাজারের বেশি মানুষকে ইতিমধ্যেই সরিয়ে সাইক্লোন শেল্টারে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়েছে ওড়িশা সরকার।
পূর্বাভাস ছিলই। সেইমতোই আছড়ে পড়ল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় 'দানা'। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ থেকে শুরু হয়ে যায় ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া। 'দানা'র দাপটে উত্তাল দিঘার সমুদ্র, প্রবল ঝড়-বৃষ্টি। বন্ধ মেরিন ড্রাইভ। ঘূর্ণিঝড়ে কার্যত লন্ডভন্ড এ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। বহু জায়গায় গাছপালা ভেঙে গিয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে মন্দারমণির নিচু জমিতে ঢুকে পড়েছে নোনা জল। ঝড়ের দাপট বকখালিতেও। এদিকে দুর্যোগ মোকাবিলায় সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। নবান্ন থেকে পুরসভা-লালবাজারে কন্ট্রোলরুম থেকে চলছে নজরদারি। পরিস্থিতির উপর প্রতি মুহূর্তে নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। রাতভর নবান্নেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরসভা থেকে নজরদারিতে মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। রাতে বিদ্যুৎভবনে অরূপ বিশ্বাস।
দিঘার পরিস্থিতি-
ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া এখনও এক থেকে দুই ঘণ্টা চলবে। যে কারণে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এখনও পর্যন্ত রয়েছে দিঘার সৈকত এলাকায়। গতকাল রাত থেকে আজ ভোর পর্যন্ত সমুদ্রের রুদ্র রূপ দেখা যায়। তবে, আজ সেই অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হলেও, ঝোড়ো হাওয়া বইছে। সমুদ্র উত্তাল অবস্থায় রয়েছে। মেঘ কালো। গতকাল ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হতেই মুষলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। তার সঙ্গে ঘূর্ণি ঝড়। রাতে ২টো নাগাদ বেড়ে যায় সমুদ্রের জলোস্তর। যার জেরে গার্ডওয়াল টপকে চলে আসে ঢেউ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল রাতে সমুদ্রের রুদ্র রূপের জেরে নিচুর অনেক এলাকায় জল জমেছে। বেশকিছু জায়গায় গাছ ভেঙে পড়েছে। তার মোকাবিলায় নেমে পড়েছে এনডিআরএফের টিম। বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তবে, বড়সড় কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও পাওয়া যায়নি।