কলম্বো : দেতোয়া নিয়ে শঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে ভারতের আকাশে। কিন্তু ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কায়। গত কয়েকদিন ধরে কার্যত তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। গত শুক্রবারই  শ্রীলঙ্কার উপকূলে আছড়ে পড়ে একটি ঘূর্ণিঝড়। সেই সঙ্গে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। 

Continues below advertisement

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বলছে, প্রবল দুর্যোগে ইতিমধ্যেই ৪৬ জন নিহত এবং ২৩ জন নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন দ্বীপরাষ্ট্রে।  সে-দেশের আবহাওয়া দফতরের বিবৃতি অনুসারে আগামী ১২ ঘন্টা ধরে দ্বীপরাষ্ট্রে আরও প্রবল হবে ঘূর্ণিঝড়। তীব্র হবে দুর্যোগ। ঘূর্ণিঝড় দেতোয়া শ্রীলঙ্কার উপকূলাঞ্চল তছনছ করে দিয়েছে। ঝড়টি আছড়ে পড়ার পর থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৩০০ মিমি (১১.৮ ইঞ্চি)রও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে জায়গয় জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে ভূমিধস।  এর ফলে বহু মানুষ হারিয়েছেন প্রাণ।  সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব ও মধ্য অঞ্চল। 

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র বা ডিএমসি-র তরফে  এক বিবৃতিতে জারি করা হয়েছে। দেশব্যাপী ৪৩,৯৯১ জনকে স্কুল এবং অন্যান্য সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।  স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। অফিসও বন্ধ বেশিরভাগ। ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাথমিকভাবে লেনদেন বন্ধ ঘোষণা করেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে , এমন এলাকায় উদ্ধার অভিযান জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে কিছু গ্রামে পৌঁছানো কঠিন কারণ ভূমিধসের কারণে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।  পরিস্থিতির অবনতি হলে শ্রীলঙ্কা তার প্রধান বিমানবন্দর থেকে দক্ষিণ ভারতের ত্রিবান্দ্রম বা কোচিন বিমানবন্দরে উড়ানগুলি সরাতে পারে।  ছয়টি উড়ান  ইতিমধ্যেই কলম্বোর বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (বিআইএ) থেকে রিডায়রেক্ট করা হয়েছে।  

Continues below advertisement

ভারতেও  তাণ্ডব চালাতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। আপাতত সেটি শ্রীলঙ্কার উপকূলীয় অঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপর সক্রিয় রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি গত ৬ ঘন্টায় ১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র ত্রিনকোমালী থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, বাত্তিকালোয়া থেকে ৭০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং হাম্বানটোটা থেকে ২২০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ছিল, যেখানে এটি ভারতের পুদুচেরী থেকে ৪৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং চেন্নাই থেকে ৫৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ছিল। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে যে ঘূর্ণিঝড় দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছে এবং ৩০ নভেম্বরের সকাল পর্যন্ত উত্তর তামিলনাড়ু, পুদুচেরী এবং দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলীয় এলাকার কাছে বঙ্গোপসাগরে পৌঁছে যাবে। আইএমডি বিভিন্ন রাজ্যের জন্য বৃষ্টি ও বাতাসের ঝুঁকির সতর্কতা জারি করেছে।