উত্তর ২৪ পরগনা: ইয়াসের হানায় উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির ধামাখালিতে রাতভর বৃষ্টি। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া।জোয়ার আসার কারণে বিদ্যাধরী নদীতে জলস্তর বাড়ায় গ্রামে জল ঢুকে যায়। ভেঙে যায় নদী বাঁধ। বাড়ির ছাদে আশ্রয় নেন গ্রামবাসীরা। কোমরে দড়ি বেঁধে তাদের উদ্ধার করে এনডিআরএফের সদস্যরা। রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় সন্দেশখালির সঙ্গে সরবেড়িয়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
এর পাশাপাশি, ধামাখালির কলাগাছি নদীতে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় আশপাশের গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করে। ন্যাজাট-সহ বিভিন্ন জায়গায় দুর্বল নদী বাঁধ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। সাইক্লোন রিলিফ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বহু মানুষকে।
ইয়াস আছড়ে পড়ার আগে আজ সকাল থেকেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ল্যান্ড ফলের সময় কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার।ঘূর্ণিঝড়ের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। দিঘায় সকাল সাড়ে ৯টায় ইয়াসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার। ওই সময়ে ফ্রেজারগঞ্জে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬৮ কিলোমিটার।আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ৯ ঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে শক্তিক্ষয় করে কমবে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা। ইয়াসের প্রভাবে আগামীকাল রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা।
ঝড়ের তাণ্ডব, প্রবল জলোচ্ছ্বাসের জেরে রাজ্যের ১৪টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত। সবথেকে প্রভাব পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। শঙ্করপুর, দিঘা, মন্দারমণি-সহ বেশ কিছু জায়গা বন্যা কবলিত। ১ কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। ১৩৪টি জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। গোসাবার বহু গ্রাম প্লাবিত। ১৫ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া, কেন্দামারিতে অনেক বাড়ি জলমগ্ন। ভরা কোটাল একইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের দাপট, দু’য়ে মিলে বড়সড় ক্ষতি হয়েছে বাংলার। নবান্নে এ কথা জানিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী।