কলকাতা: শেষ হল ইয়াসের ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া। নির্ধারিত সময়ের আগেই ওড়িশার বালেশ্বরে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সকাল সোয়া ৯টা নাগাদ শুরু হয় ল্যান্ড ফল। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে এই ল্যান্ডফল চলে। ল্যান্ড ফলের সময় সাইক্লোনের আই অংশটি ঢুকতে শুরু করে স্থলভাগে। এই মাঝের অংশটি ঢোকার সময় ঝড়ের বেগ ও বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমে যায়। টেল অংশটি অতিক্রম করে যাওয়ার সময় ফের ঝড়ের দাপট বাড়ে। বাড়ে বৃষ্টিও।


আজ সকালে সাইক্লোনের ক্লাউড ওয়াল ঢুকতে শুরু করায় ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডব শুরু হয়। সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। দিঘায় সকাল সাড়ে ৬টায় ইয়াসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার। আছড়ে পড়ার আগেই প্রভাব দেখাতে শুরু করেছে ইয়াস। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় শুরু হয় বৃষ্টি। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়াতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।


ইয়াসের জেরে দিকে দিকে তাণ্ডবলীলার ছবি। কোথাও ভাঙল বাঁধ। কোথাও উপড়ে গেল গাছ। প্লাবিত বিস্তীর্ণ এলাকা। ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার পরেই দিঘায় উত্তাল সমুদ্র। ঢেউ ছুঁল নারকেল গাছের মাথা। ভাঙল বোল্ডারের বাঁধ। দিঘার কাছে উদয়পুর বিচে ইয়াসের ধ্বংসলীলা। গুঁড়িয়ে গিয়েছে পাকা ছাদ। একাধিক ঝুপড়ি মাটিতে। সমুদ্রের ধারে রাখা নৌকা ভেঙে টুকরো। ঢেউয়ের তোড়ে সমুদ্রের ধারের বোল্ডার ভেসে গিয়েছে বহুদূর। কাকদ্বীপে ঢুকে যায় মুড়িগঙ্গার জল। সন্দেশখালিতে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত কলাগাছি নদী। ধামাখালিতে গ্রামবাসীদের দড়ি বেঁধে উদ্ধার। জলমগ্ন গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির আশ্রমে এনডিআরএফ।


উল্লেখ্য, এদিন ল্যান্ডফলের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি জানান, আগামী ৯ ঘণ্টা তীব্র থাকবে ঝড়। ৯ ঘণ্টা পর থেকে কমবে তীব্রতা। আগামী ৩ ঘণ্টায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় থাকবে ইয়াস। তারপর আগামী ৬ ঘণ্টায় শক্তি হারাবে ইয়াস। বাঁকুড়া-পুরুলিয়ায় ভারী বৃষ্টি চলবে। হাওড়া, হুগলিতে বৃষ্টি হবে।