চেন্নাই: এই ভারতেই রয়েছে আরও একটি ভারত। প্রায় নিত্যদিনই প্রমাণ মেলে তার। এবার প্রমাণ মিলল তামিলনাড়ুতে। প্রায় অর্ধশতক ধরে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পর, বুধবার সেখানে মন্দিরে প্রবেশের অধিকার পেলেন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষজন। তবে খোলা মনে দর্শন হল না। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বুঝে পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে হল তাঁদের। সেই খবর ছড়িয়ে পড়েছে মুখে মুখে। (Viral News)


তামিলনাড়ুর তিরুআন্নামালাই জেলার চেলানকুপ্পম গ্রামের ঘটনা। সেখানে মারিয়াম্মান মন্দিরে দলিতদের প্রবেশ নিয়ে সংঘাত চলে আসছে বিগত কয়েক দশক ধরে। অবশেষে বুধবার মন্দিরে ঢোকার সুযোগ পেলেন দলিত সম্প্রদায়ের প্রায় ২৫০ মানুষ। পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মন্দিরে প্রবেশ করলেন তাঁরা, আবার পুলিশি নিরাপত্তাতেই দর্শন সেরে বেরিয়ে গেলেন। (Tamil Nadu News)


মন্দিরে প্রবেশ নিয়ে সম্প্রতি প্রাক্তন দুই সহপাঠীর মধ্যে সংঘাত বাধে। তাঁদের মধ্যে একজন দলিত সম্প্রদায়ের, অন্য জন বান্নিয়ার সম্প্রদায়ের। সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা কাটাকাটি বচসা থেকে ঝামেলা জল গড়ায় স্থানীয় স্তর পর্যন্ত।  তার জেরে দলিত সম্প্রদায়ের মন্দিরে ঢোকার অধিকার নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। তাতে তেতে ওঠে পরিস্থিতি। দুই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে দফায় দফায় বাধে সংঘর্ষও। 


আরও পড়ুন: Cheetah Deaths: বিজ্ঞানসম্মত প্রশিক্ষণ নেই কারও, বিশেষজ্ঞদের মতামতও শোনা হচ্ছে না, অব্যবস্থার জন্যই চিতামৃত্যু, বিদেশ থেকে এল চিঠি


এর পর, জেলা রাজস্ব দফতরে বিষয়টি উত্থাপন করেন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষজন। মন্দিরে প্রবেশাধিকার চেয়ে আবেদন জানানো হয়। প্রশাসন সাহায্য় না করলে, ২ অগাস্ট তাঁরা মন্দিরে ঢুকবেন এবং কিছু ঘটলে তার দায় প্রশাসনের উপর বর্তাবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। তাতেই প্রশাসনিক স্তরে তৎপরতা শুরু হয়। ভেলোর রকেঞ্জের ডিজি নিজে তৎপরতা দেখান। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রস্তুত করা হয় বিরাট পুলিশবাহিনী।


যে চেল্লানকুপ্পম গ্রামের ঘটনা, সেখানে ১৩০০ পরিবারের বাস। ওই গ্রামে দলিতরাই সংখ্যালঘু। মারিয়াম্মান মন্দির হিন্দু রিলিজিয়াস অ্যান্ড চ্যারিটেবল এনডাওমেন্টস-এর আওতায় পড়ে। বিয়ের পর ওই মন্দিরে গিয়ে আশীর্বাদ নেওয়ার চল রয়েছে নবদম্পতিদের মধ্যে। সেখানে গিয়ে কিছু কামনা করলে, তা অবশ্যই মেলে বলেও বিশ্বাস রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। কিন্তু বিগত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই মন্দিরে দলিতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। বুধবার সেই বেড়াজাল ভাঙল। ফুল, মালা, ফল, মিষ্টি নিয়ে মন্দিরে পুজো দিলেন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষজন। অশান্তি আটকাতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেনি।