পার্থ প্রতিম ঘোষ, সৌমিত্র রায়, নয়াদিল্লি: ফরিদাবাদ থেকে দিল্লি, ১ ঘণ্টার রাস্তা আসতে কেন লাগল ৭ ঘণ্টা? ৬ ঘণ্টা কোথায় কোথায় গিয়েছিল i20 গাড়িটি? ঘাবড়ে গিয়েই কি বিস্ফোরণ ঘটায় চিকিৎসক উমর উন নবি? প্রশ্নগুলো ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। পাশাপাশি, স্ক্য়ানারে রয়েছে উমরের নামে নথিভুক্ত রহস্য়জনক লাল ইকো স্পোর্ট গাড়ি।
কখনও ব্য়স্ত রাস্তায় বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে এগোচ্ছে। কখনও গাড়ি থেকে নেমে হাঁটছে..কখনও আবার টোল প্লাজায় টাকা দিতে দেখা যাচ্ছে চিকিৎসক উমর-উন-নবিকে। সোমবার, দিল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের দিনের অন্তত ৫০টা জায়গার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ হাতে এসেছে তদন্তকারীদের। সেখানে ধরা পড়েছে ডক্টর্স গ্য়াং-এর অন্য়তম সদস্য়, বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্রকারী উমর-উন-নবির একাধিক গতিবিধি...কিন্তু, পুরো ঘটনাক্রমের সময়টা, ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। ফরিদাবাদ থেকে দিল্লি...৩০ কিলোমিটার রাস্তা...যা কিনা যেতে খুব বেশি হলে ১ ঘণ্টা লাগার কথা..অথচ ৭ ঘণ্টায় সেই গন্তব্য়ে পৌঁছচ্ছে উমর...কিন্তু কেন? পুলিশ সূত্রে দাবি, সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় হরিয়ানার ফরিদাবাদে ছিল গাড়িটি। CCTV ফুটেজে ধরা পড়েছে, ওই সময়ে ফরিদাবাদের এশিয়ান হাসপাতাল থেকে বেরোতে দেখা যায় উমরের i20 গাড়ি। সকাল ৮টা ১৩ মিনিটে দেখা যায় গাড়িটি বদরপুর টোল প্লাজা থেকে দিল্লিতে ঢুকছে। মুখে মাস্ক পরে, চালকের আসনে বসে উমর-উন-নবি। গাড়ির পিছনের সিটে রাখা একটি বড় ব্যাগ। এই কালো গাড়ির পিছনে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর, এগোতে শুরু করে গাড়িটি..সিসিটিভিতেই দেখা যাচ্ছে... টোল প্লাজার কর্মীর সঙ্গে কথা বলছে উমর..টাকা দিচ্ছে..বাকি টাকা ফেরত নিচ্ছে...এরপর টোল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।
আবার, আবার দুপুর ২টো ৫ মিনিটে দেখা যায়, কনট প্লেসের রাস্তা দিয়ে এগোচ্ছে সেই হুন্ডাই I20. এরপর বেশ কিছক্ষণ গাড়িটি কোথায় ছিল, তার হদিশ পাওয়া যায়নি। কনট প্লেস থেকে সংসদ ভবনের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার...দুপুর ৩টে ১৯ মিনিটে, লালকেল্লার কাছাকাছি পার্কিং লটে দেখা যায় গাড়িটি।সূত্রের খবর, এর মাঝে রামলীলা ময়দানের কাছে আসফ আলি রোডের একটি মসজিদে গিয়েছিল উমন উন নবি। মসজিদ থেকে বেরিয়ে চলে যায় পার্কিং লটে। কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে, ১ ঘণ্টার রাস্তা আসতে ৭ ঘণ্টা লাগল কেন? কী করছিল উমর উন নবি?
এদিকে ফরেন্সিক পরীক্ষার পর তদন্তকারীরা নিশ্চিত হয়েছে, যে লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণেই চিকিৎক উমর-উন-নবির মৃত্য়ু হয়েছে!পুলিশ সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের পরে, উমরের পা গাড়ির স্টিয়ারিং হুইল এবং অ্যাক্সিলারেটরের মধ্যে আটকে থাকা অবস্থায় পাওয়া গেছে। কিন্তু, শুধুমাত্র এই বিস্ফোরকবোঝাই হুন্ডাই I-20-ই নয়..তদন্তকারীদের স্ক্য়ানারে রয়েছে উমর উন নবির নামে নথিভুক্ত রহস্য়জনক এই লাল ইকো স্পোর্ট গাড়িটিও। বুধবার, হরিয়ানার ফরিদাবাদের খান্ডাওয়ালি গ্রামে সন্ধান মেলে গাড়িটির। এরপর, একে একে NIA.... NSG এবং ফরেন্সিক টিম পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্য়েই, ফাহিম নামে একজনকে আটক করেছে ফরিদাবাদ পুলিশ। যিনি লালকেল্লা বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রী উমর-উন-নবির আত্মীয়। এই ফাহিমই ফরিদাবাদের খান্ডাওয়ালি গ্রামে এসে লাল এই ইকো স্পোর্ট গাড়িটি রেখে যায় বলে অনুমান পুলিশ সূত্রে। তদন্তকারীদের অনুমান, i20 ও লাল ইকো স্পোর্টস গাড়ি ছাড়াও বিস্ফোরণের জন্য় প্রস্তুত করা হচ্ছিল আরও একাধিক গাড়ি। তাহলে কি আরও বিশাল কোনও পরিকল্পনা ছিল ডক্টর্স গ্য়াং-এর?