নয়াদিল্লি: রবিবার, ছুটির দিনে টানা ন'ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ। শেষ মেশ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (CBI) দফতর থেকে বেরোলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind KEjriwal)। রওনা দিলেন নিজের বাসভবনের দিকে। আবগারি দুর্নীতি মামলায় সাক্ষী হিসেবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করল CBI. আপাতত তাঁকে আর জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই বলে CBI সূত্রে জানা যাচ্ছে (Delhi Liquor Policy)। 


এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখিও হন কেজরিওয়াল


CBI দফতর থেকে বেরিয়ে এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখিও হন কেজরিওয়াল। বলেন, "সাড়ে ৯ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ওদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি আমি। আবগারি দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্য  এবং অত্যন্ত নিন্দনীয় রাজনীতির অংশ। আপ কট্টর সততার পক্ষে। ওরা আপ-কে শেষ করে দিতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ আমাদের পাশে আছেন।"


দিল্লির প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী, কেজরিওয়ালের অধস্তন, মণীশ সিসৌদিয়াকে গত মাসে এই আবগারি দুর্নীতি মামলাতেই গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, একটি নির্দিষ্ট সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিতে রাজধানী দিল্লিতে মদের আবগারি শুল্কনীতিতে রদবদল ঘটানো হয়। তার জন্য আর্থিক লেনদেনও হয়েছিল বলে অভিযোগ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।



আরও পড়ুন: Sukesh Chandrasekhar: দিল্লি আবগারি দুর্নীতির গোপন তথ্যও নখদর্পণে! জেলে বসেই এ বার ভোটে দাঁড়ানোর ঘোষণা জ্যাকলিনের ‘তোলাবাজ প্রেমিকে’র


সেই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয় কেজরিওয়ালকেও। রবিবার তাঁকে যখন জিজ্ঞাসাবাদ করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা, সেই সময় দিল্লিতে আপ-এর শীর্ষ নেতৃত্ব জরুরি বৈঠকে বসেন। কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও জল্পনা ছড়ায়। যদিও শেষ মেশ রাতে CBI দফতর থেকে বেরিয়েই এলেন কেজরিওয়াল। আপাতত তাঁকে আর ডেকে পাঠানোর সম্ভাবনাও নেই বলে CBI সূত্রে জানা গিয়েছে।


তবে কেজরিওয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে এ দিন দিনভর উত্তপ্ত ছিল রাজধানীর পরিস্থিতি। মধ্য দিল্লির লোধি রোডে CBI দফতরের বাইরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান আপ নেতারা। সেখানে দিল্লি পুলিশ রাঘব চাড্ডা, সঞ্জয় সিংহদের আটক করে। কেজরিওয়াল CBI দফতর থেকে বেরিয়ে আসার পর যদিও ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁদের। রাঘব বলেন, "কেজরিওয়াল আতঙ্কে ভুগছে বিজেপি। তার জন্যই এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জেলে যাওয়ার ভয় নেই আমাদের।"


CBI-এর দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে সিসৌদিয়ার তৎকালীন সচিব জানিয়েছেন, ২০২১ সালের মার্চ মাসে আবগারি নীতির খসড়া হাতে পান তিনি। কেজরিওয়ালের বাসভবনে সিসৌদিয়াই সেটি তুলে দেন সচিবের হাতে। সিসৌদিয়ার তৎকালীন সচিব সি অরবিন্দ এ নিয়ে ম্যাজিস্ট্র্রেটের সামনে বয়ানও রেকর্ড করেছেন। নিজের বাসভবনের সেই বৈঠক নিয়ে বিশদ তথ্য তাঁর কাছ থেকে জানতেই কেজরিওয়ালকে ডেকে পাঠানো হয় বলে দাবি CBI-এর।


২০২২ সালের জুলাই মাসে নীতি প্রত্যাহার করে নেয় AAP সরকার


দিল্লির আবগারি নীতি নিয়ে দিল্লির তৎকালীন লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল বৈজল তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরও ওই নীতিতে অনুমোদন দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পর পর দু'বার সেটির রূপায়ণ আটকে যাওয়ার পরও কেন অনুমোদিত হল, তা-ই জানতে চায় CBI. যদিও ২০২২ সালের জুলাই মাসে, রূপায়ণের এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই ওই নীতি প্রত্যাহার করে দিল্লির আপ সরকার। পুরনো নীতিই ফেরানো হয়।