নয়াদিল্লি: ভয়াবহ বললেও কম বলা হয়।  প্রবল বৃষ্টিতে জলের তোড়ে বেসমেন্টে থাকা ইউপিএসসি-র কোচিং সেন্টারে মৃত্যু হয়েছে ৩ পড়ুয়ার । আপাতত এই ঘটনা নিয়ে উত্তাল রাজধানী। রবিবার বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বহু পড়ুয়া। শুরু হয়েছে দেদার রাজনৈতিক টানাপোড়েন। আপ - সরকারকে ইতিমধ্যেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। এই নিয়েই চলছে দড়ি টানাটানি। এরই মধ্যে সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। 


শনিবার দিল্লির রাজেন্দ্রনগরে UPSC-র কোচিং নিতে গিয়ে প্রাণ যায় ৩ পড়ুয়ার। হঠাৎ বৃষ্টির জল তীব্র বেগে ঢুকে আসে  রাজেন্দ্রনগরে  UPSC-র কোচিং সেন্টারের বেসমেন্ট। জলমগ্ন হয়ে পড়ে বেসমেন্টে কোচিং সেন্টারের লাইব্রেরি। সে সময় অনেকেই ছিলেন লাইব্রেরিতে পড়াশোনায় মগ্ন। তাঁরা কেউ কেউ উঠে আসতে পারলেও , সবাই পারেননি। জলে ডুবেই মৃত্যু হয় কেরল, তেলঙ্গানা ও উত্তরপ্রদেশের ৩ IAS পড়ুয়ার। কীভাবে বেসমেন্টের ১২ ফুট জলের তলায় চলে গেল? উঠে আসছে নিয়মভঙ্গের নানা তথ্য। 


ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় UPSC কোচিং সেন্টারের মালিক ও কোঅর্ডিনেটরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বেআইনিভাবে বেসমেন্ট চত্বরকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন দিল্লির মেয়র। কিন্তু তার থেকেও চাঞ্চল্যকর তথ্য হল, আগেই এই বিষয়ে ওই বিল্ডিং কর্তৃপক্ষ , রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানান এই ছাত্র। সংবাদ সংস্থা আইএএনএস সামনে এনেছে ওই অভিযোগকারীর বক্তব্য। কিশোর সিংহ কুশওয়া নামে একজন সিভিল সার্ভিস এ সুযোগ পাওয়ার আশায় কোচিং নিতে যাওয়া পড়ুয়া আগে একাধিক বার সতর্ক করেছিলেন। চিঠির দিনক্ষণ উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।


এভাবে  বেসমেন্টে কোচিং সেন্টার চালানো বেআইনি, যে কোনও মুহূর্তে ঘটতে পারে বিপদ, আগেই সিঁদুরে মেঘ দেখে ছিলেন কিশোর সিং।  কেন্দ্র, রাজ্য সরকার এবং দিল্লি মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশনকে চিঠি লিখে প্রকাশ করেছিলেন আশঙ্কার কথা।  আইএএস স্টাডি সার্কেল কীভাবে কোনও নো-অবজেকশন-সার্টিফিকেট ছাড়া বেসমেন্টটিকে লাইব্রেরি হিসাবে ব্যবহার করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওই ছাত্র। এর ফলে যে কোনওদিন বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। 


এনডিটিভি সূত্রে খবর, দিল্লি মিউনিসিপাল কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র স্টোরেজ এবং পার্কিংয়ের জন্যই বেসমেন্ট ব্যবহারের অনুমতি ছিল। করোলবাগ জোনের বিল্ডিং বিভাগের পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার কুমার মহেন্দ্রকে আগেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল বলে জানান ওই ছাত্র। তিনি লিখছিলেন,   রাউ আইএএস কোচিং সেন্টারটি কর্তৃপক্ষের অনুমতি  ছাড়াই ক্লাসের জন্য বেসমেন্ট ব্যবহার করছে।  একটা চিঠি নয়, বারবার বিল্ডিং  কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন তিনি।  রিমাইন্ডার মেল পাঠিয়েছিলেন ১৫ ও ২২ জুলাই। আর তার কয়েকদিনের মধ্যেই এই মর্মান্তিক ঘটনা।   


আইএএনএস জানিয়েছে , অন্তত ২০ জন ছাত্র সেদিন আইএএস কোচিং সেন্টারের লাইব্রেরিতে ছিলেন। তাঁরা আটকে পড়েন।   তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উদ্ধার করা গেলেও তানিয়া সোনি এবং শ্রেয়া যাদব, নবীন ডেলভিন, দের উদ্ধার করা যায়নি । অভিযোগ, এমন অনেক কোচিং সেন্টারেরই নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নেই। 


আরও পড়ুন :


চুপিসাড়েই বাসা বাঁধতে পারে শরীরে, ধাক্কা দিতে পারে মারণ-ব্যাধি হয়ে, কীভাবে চিনবেন, কীভাবে রুখবেন হেপাটাইটিস B?