দিল্লি : অক্সিজেন না পেয়ে মৃ্ত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে রোগী। সেখানে খাস দিল্লিতেই চলছে অক্সিজেনের কালোবাজারি। শুক্রবার দিল্লির দশরথপুরি এলাকা থেকে এরকমই ৪৮টি অক্সিজেন সিলিন্ডার উদ্ধার করা হয় । সিলিন্ডারগুলি মজুত করার অভিযোগে গতকালই অভিযুক্ত অনিল কুমারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।


রাজধানীতে বেড়েই চলেছে কোভিড রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনই রেকর্ড গড়ছে করোনা। সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে অক্সিজেনের হাহাকার দেখা দিয়েছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় মুখ্যমন্ত্রী, স্থ্যাস্থমন্ত্রককে টুইট করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সবার মুখেই এক কথা, কয়েক ঘণ্টার অক্সিজেন মজুত রয়েছে হাসপাতালে। সময়ের মধ্যে সিলিন্ডার না পেলে মারা যেতে পারেন বহু রোগী। অক্সিজেনের অভাবে গতকাল রাতেই দিল্লির বেসরকারি জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতালে ২০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।


দিল্লির সঙ্কট যখন এই জায়গায় পৌঁছেছে, তখন অক্সিজেন মজুত করে কালোবাজারিতে নেমেছে কিছু অসাধু মানুষ। শুক্রবার এরকমই একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দিল্লির দশরথপুরি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় ৩২টি বড় ও ১৬টি ছোটো অক্সিজেন সিলিন্ডার। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, রুটিন নজরদারির সময় খবর পায় তারা। এক ইনফর্মার জানান, বেআইনিভাবে অক্সিজেন মজুত রাখা হয়েছে একটি বাড়িতে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ হানা দেয় সেই বাড়িতে। দশরথপুরির ৬নম্বর গলির বি-৬৬ বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় সিলিন্ডারগুলি।


পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়ির গ্রাউন্ড ফ্লোরে রাখা ছিল অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলি। যার মধ্যে বড় সিলিন্ডারগুলিতে ৬৭লিটার অক্সিজেন ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। পাশাপাশি ছোটো সিলিন্ডারে রাখা যায় ১০লিটার অক্সিজেন। এই ঘটনায় ওই বাড়ির মালিক অনিল কুমারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৫১ বছরের অনিলের কারখানায় গ্যাস সরবরাহের লাইসেন্স রয়েছে। তবে অক্সিজেন সরবরাহের কোনও অনুমতিপত্র নেই তার। পুলিশের মতে, লাইসেন্স ছাড়া এই অক্সিজেন রাখা কোনওভাবেই উচিত নয়। দাহ্য পদার্থ হওয়ায় এর থেকে যে কোনও সময় বিপদ হতে পারে। সামান্য অবহেলায় বিধ্বসী আগুন লাগতে পারে এলাকায়।


জেরায় ধৃত জানিয়েছে, বড় সিলিন্ডার থেকে ছোটো সিলিন্ডারে অক্সিজেন ভরত সে। পরে সিলিন্ডার পিছু গ্রাহকদের থেকে ১২,৫০০ টাকা করে নিত। দিল্লির মায়াপুরি এলাকায় রয়েছে তার মূল গোডাউন। স্বীকারোক্তির পরই ধৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ মামলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবারই উদ্ধার হওয়া সিলিন্ডারগুলি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ভেন্ডারের কাছে দেওয়া হবে। আদালতের নির্দেশ মেনেই হবে এই কাজ। যাতে মহামারীর সময় অক্সিজেনের সুবিধা পেতে পারে রাজধানীর হাসপাতালগুলি।