নয়াদিল্লি: তিন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর ও পরবেশ বর্মার বিরুদ্ধে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কে কেন্দ্র করে ঘটে চলা অশান্তি, হিংসা নিয়ে প্ররোচনামূলক কথাবার্তা বলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁদের নামে এফআইআর রুজু করার ব্যাপারে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে বলল দিল্লি হাইকোর্ট। দিল্লি পুলিশের বিশেষ কমিশনার প্রবীর রঞ্জন বিচারপতি এস মুরলীধর ও বিচারপতি তালবন্ত সিংহকে নিয়ে গঠিত দিল্লি হাইকোর্টের বেঞ্চকে আশ্বাস দেন, তিনি আজই পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন এবং ওই তিনজনের ভাষণের সব ভিডিও খতিয়ে দেখে এফআইআর দায়েরের ব্যাপারে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নেবেন। বেঞ্চ তাঁর বক্তব্য শোনে।
উত্তরপূর্ব দিল্লির গত কয়েকদিনের হিংসার ব্য়াপারে অবসরপ্রাপ্ত আমলা তথা সমাজকর্মী হর্ষ মান্দারের দায়ের করা এক পিটিশনের শুনানি করে বেঞ্চ। পিটিশনার এফআইআর রুজু করে হিংসায় জড়িত লোকজনের গ্রেফতারি, রাজধানীতে সেনা মোতায়েন, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।
বেঞ্চ উত্তর পূর্ব নয়াদিল্লির হিংসার ব্য়াপারে কোনও মামলা এখনও পর্যন্ত দায়ের না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে, হিংসার পর্বে প্ররোচনামূলক বক্তব্যের জন্য এফআইআর দায়ের করা নিয়ে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে বলে দিল্লির পুলিশ কমিশনারকে। বিচারপতি মুরলিধর বলেন, শুধু এফআইআরটা করুন। আপনারা লুঠপাটের ঘটনায় এফআইআর রুজু করার ব্যাপারে সক্রিয়তা দেখিয়েছেন। তবে কেন এইসব ভাষণের জন্য এফআইআর করার সমান তত্পরতা দেখাচ্ছেন না? আপনারা যত দেরি করবেন(এফআইআর দায়ের করায়), তত সমস্যা বাড়বে। একটাও এফআইআর দায়ের না হওয়ায় সমাজে একটা ভুল বার্তা যায়। শহরটা জ্বলছে।
এদিন কপিল, অনুরাগ, পরবেশ-তিনজনের বক্তব্যের ভিডিও আদালতে চালিয়ে শোনানো হয়।
পিটিশনারের আইনজীবী কলিন গনজালভেস বলেন, ওরা নিজেদের বক্তব্যের জন্য খুব গর্বিত বলে মনে হয়। ওদের গ্রেফতার করা পরিস্থিতি শান্ত করায় প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে।
কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, সব পক্ষ থেকেই ভিডিও ছড়ানো হয়েছে, কিন্তু পিটিশনার মাত্র এই তিনটি ভিডিওকেই বেছেছেন। তিনি আদালতকে বলুন, কেন শুধু এগুলিই বাছলেন। এই তিনটি ভিডিওর পরিপ্রেক্ষিতে জনরোষ বাছাই করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, হিংসার সময় সব তরফ থেকেই ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ানো ভাষণ দেওয়া হচ্ছে। এটা প্রমাণ করার জন্য় তাঁর কাছে ভিডিওগুলি আছে। আমি এই ক্লিপগুলি বাজানো শুরু করলে উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হবে। পিটিশনার এইসব ক্লিপ দেখিয়ে পুলিশকে খাটো করছেন বলেও অভিযোগ করেন মেহতা। কিন্তু সেকথায় কান না দিয়ে বেঞ্চ বলে, একথা বলে আপনি পুলিশকে আরও খারাপ চোখে দেখাচ্ছেন। আপনারা কাছে যখন অজস্র উসকানিমূলক বক্তব্যের ভিডিও আছে,তখন কেন এফআইআর দায়ের করছেন না? সব ভিডিও পুলিশ কমিশনারের সামনে পেশ করা হবে এবং তিনি অবশ্যই ভেবেচিন্তে একটা সিদ্ধান্ত নেবেন।