নয়াদিল্লি: উত্তরাধিকারের দাবি নিয়ে লালকেল্লার দখল চেয়ে আদালতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দিল্লি হাই কোর্ট থেকে খালি হাতে ফিরতে হল সত্তর ছুঁইছুঁই মহিলা।  


উত্তরাধিকারের দাবি নিয়ে লালকেল্লার দখল চেয়েছিলেন। কিন্তু দিল্লি হাই কোর্ট থেকে খালি হাতে ফিরতে হল সত্তর ছুঁইছুই মহিলাকে। আদালত জানিয়েছে, ওই মহিলা বাহাদুর শাহের উত্তরাধিকার কি না, তা পরে দেখা হবে। আগে তাঁকে জানাতে হবে, লালকেল্লার দখল পেতে ১৭০ বছর অপেক্ষা করলেন কেন তিনি। ওই মহিলার আর্জি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।


পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার একটি বস্তি এলাকার বাসিন্দা ৬৮ বছর বয়সি সুলতানা বেগম। ভারত সরকার বেআইনি ভাবে লালকেল্লা দখল করে রেখেছে বলে দাবি করে আদালতে গিয়েছিলেন তিনি। সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের দাবিও জানিয়েছিলেন। সোমবার তার শুনানি চলাকালীন ওই মহিলার আইনজীবীকে তিরস্কার করেন বিচারপতি রেখা পাটিল।


নিজের আবেদনে ওই মহিলা জানিয়েছিলেন, বাহাদুর সাহের প্রপৌত্র মির্জা মহম্মদ বেদর বখতের স্ত্রী তিনি। তাঁর স্বামী তকালীন রেঙ্গুন থেকে নিরাপদে পালিয়ে আসতে পেরেছিলেন। ১৯৬০ সালে তাঁর স্বামীকে বাহাদুর শাহের উত্তরাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল ভারত সরকার। স্বামীর মৃত্যুর পর পেনশনও পান তিনি। কিন্তু লালকেল্লার দখল পাননি, উত্তরাধিকার সূত্রে যা তার প্রাপ্য।  


আরও পড়ুন: Jaya Bachchan Update: ‘খুব খারাপ দিন আসছে আপনাদের’, সংসদে মেজাজ হারালেন জয়া


কিন্তু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে বাঁচতে যেখানে রেঙ্গুনে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাহাদুর শাহ, সেখানে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ কী ভাবে খাটে,  তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, “আগে বলুন এত দেরি করে আদালতে এলেন কেন। লালকেল্লার মালিকানা পাবেন কি না পাবেন, সে কথা ভুলে যান। প্রথন লাইনেই তো লিখেছেন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অবিচার করেছে আপনার সঙ্গে।”


মহিলার আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল পড়াশোনা জানেন না। তাই ভারত সরকার ইস্ট ইন্ডয়া কোম্পানির ফারাক বুঝতে পারেননি। কিন্তু তাতে তাঁর উপর ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তিনি বলেন, “আপনার কথাই যদি ধরি, তাহলে ১৮৫৭ সালে অবিচার হয়েছিল। ১৭০ বছর পর আদালতে এসেছেন। এটা কী ভাবে সম্ভব বলুন। লালকেল্লার মালিকানা নিয়ে না হয় তার পর বসব।”


এই ধরনের আবেদন জমা দিয়ে শুধুমাত্র আদালতের সময় নষ্ট করা হচ্ছে বলেও ওই মহিলার আইনজীবীকে তিরস্কার করেন বিচারপতি। এ দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল চেতন শর্মা। তাঁর কিছু বলার আছে কি না জানতে চান বিচারপতি। জবাবে তিনি বলেন, “ভারত সরকারের হাতেই যে লালকেল্লা থাকল, এতেই খুশি আমি।”