নয়াদিল্লি: গ্রেফতার হওয়ার দু'দিন পরই দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মণীশ সিসৌদিয়া (Manish Sisodia)। ইস্তফা দিলেন সত্যেন্দ্র জৈনও (Satyendra Jain)। তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arbvind Kejriwal)। খুব শীঘ্রই দিল্লি সরকারের মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল হতে পারে। দায়িত্বে নতুন লোকজনকে আনা হতে পারে বলে দিল্লি সূত্রে খবর মিলেছে (Delhi Ministers Resignation)। তবে সিসৌদিা জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যআবতীয় অভিযোগকে মিথ্যে হবেই। ততদিন তিনি সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 


তিন পাতার পদত্যাগপত্রে সিসৌদিয়া লেখেন, 'এই অভিযোগ কিছু ভীরু এবং দুর্বল মানুষের ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। আমি ওদের নিশানায় নই, ওদের নিশানায় আসলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দুর্নীতিগ্রস্ত হতে জোর করা যায় না। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা আমার শক্তি। সত্যের জন্য় দাঁড়ালে, জয় আসবেই'।


দায়িত্বে নতুন লোকজনকে আনা হতে পারে বলে দিল্লি সূত্রে খবর


দীর্ঘ ১০ মাস ধরে জেলে রয়েছেন সত্যেন্দ্র। তাঁর স্বাস্থ্য দফতর-সহ দিল্লির ১৮টি বিভাগের দায়িত্ব এতদিন একাহাতে সামলাচ্ছিলেন সিসৌদিয়া। মঙ্গলবার তাঁরা দু'জনেই নিজ নিজ পদ থেকে ইস্তফা দিলেনন। তা গ্রহণও করে নিয়েছেন কেজরিওয়াল। সিসৌদিয়া এবং সত্যেন্দ্রের জায়গায় নতুন মুখ আনার প্রস্তুততি শুরু করে দিয়েছেন তিনি। শীঘ্রই বিধানসভায় রদবদল ঘটাবেন বলে জানা গিয়েছে। 


আরও পড়ুন: Prahlad Modi: আধ্যাত্মিক সফরের মাঝেই বিপত্তি, হাসপাতালে ভর্তি মোদির ভাই প্রহ্লাদ


দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় (Delhi Liquor Policy Case) রবিবার সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হন সিসৌদিয়া। সেই গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এই মামলায় হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থেকেছেন। বিকল্প রাস্তা ধরতে সিসৌদিয়াকে পরামর্শ দেন তিনি। তার পরই পদত্যাগ করলেন সিসৌদিয়া। 


বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এই মামলায় হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থেকেছেন


সোমবার সিসৌদিয়াকে পাঁচ দিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছে দিল্লির বিশেষ আদালত। নিরপেক্ষ তদন্তের খাতিরেই সিসৌদিয়ার কাছ থেকে যাবতীয় প্রশ্নের সদুত্তর পাওয়া জরুরি বলে আদালতে জানিয়েছিল সিবিআই। তাতে সম্মতি দেয় আদালত। এর পরই দিল্লির সরকারে তাঁদের থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিজেপি-র তরফে এ নিয়ে আক্রমণ করা হয় দিল্লির আম আদমি পার্টির সরকারকে। গ্রেফতারির পরও তাঁদের কেন মন্ত্রী হিসেবে রেখে দেওয়া হয়েছে, তোলা হয় প্রশ্ন। তাতেই পদত্যাগ কিনা, উঠছে প্রশ্ন। সিসৌদিয়া এবং সত্যেন্দ্রর পদত্যাগের পর এই মুুহূর্তে দিল্লি সরকারে কেজরিওয়াল-সহ মাত্র পাঁচ মন্ত্রী থাকলেন।


দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় বেশ কিছু দিন ধরেই সক্রিয় সিবিআই। বারং বার জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় সিসৌদিয়াকে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছি বলে অভিয়োগ করেন তিনি। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে এক সপ্তাহ আগেই কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন, সিসৌদিয়াকে রবিবার গ্রেফতার করা হতে পারে। রবিবার সিসৌদিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীই মিলে গেল বলে দাবি করেন আপ সমর্থকরা।