নয়া দিল্লি: সন্তানের সুখের জন্য মা যে কত কিছু করতে পারেন, তার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে রইলেন অশীতিপর এক বৃদ্ধা। মা মানেই যে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি আরেকবার ধরা দিল সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে। 


বৃদ্ধার বয়স ৮০। ছেলের ৫৯। এমতাবস্থায় যখন জানতে পারলেন যে ছেলের একটা কিডনি বিকল তখন আর মানসিকভাবে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। চিকিৎসকদের কাছে অনুরোধ করেছিলেন- 'আমার একটা কিডনি দিয়ে আমার ছেলেকে বাঁচান ডাক্তারবাবু'। কিন্তু বললেই  আর হয় না। কিডনি মিলতেও তো হবে।                                   


উত্তর-পশ্চিম দিল্লির রোহিণীর ব্যবসায়ী রাজেশ পিটিআইকে বলেন যে দুই বছর আগে যখন তার কিডনি রোগ ধরা পড়ে, তখন তার মা নিজের কিডনি দান করতে এগিয়ে আসেন। চিকিৎসা পরীক্ষার পর, ডাক্তাররা তার মায়ের কিডনিকে উপযুক্ত বলে মনে করেন। তিনি বলেন, "সেই সময়, আমি দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম। আমার মা বৃদ্ধ ছিলেন, এবং সমাজ কী বলবে ভেবে আমি তার কিডনি নেওয়ার বিষয়ে চিন্তিত ছিলাম? তাই, আমি প্রতিস্থাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম"। 


এদিকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর শরীরও খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় পরিবার থেকেই তাঁকে জোর করে এই সিদ্ধান্তই নেওয়ার কথা বলে। সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, রাজেশের পরিবারের সদস্যরা তাকে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে রাজি করান এবং অবশেষে তিনি প্রতিস্থাপনে রাজি হন। 


আরও পড়ুন, কলকাতায় ২ দিন থেকেই ওষ্ঠাগত প্রাণ! 'মুম্বই বেস্ট' মহিলার পোস্টে বিতর্ক তুঙ্গে


বিএলকে-ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ইউরোলজি এবং রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর এবং প্রধান ডাঃ এইচএস ভাটিয়ালের নেতৃত্বে একটি দল এই অস্ত্রোপচারটি করেন। চিকিৎসকদের কথায়, আধুনিক চিকিৎসার সম্ভাবনা এবং একজন মায়ের অদম্য মনোবলকে তুলে ধরে। তার বয়স চ্যালেঞ্জ হওয়া সত্ত্বেও, অস্ত্রোপচারটি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে। 


দর্শনা জৈনকে অস্ত্রোপচারের চতুর্থ দিনে ছেড়ে দেওয়া হয়, আর রাজেশকে সুস্থ হওয়ার ষষ্ঠ দিনে ছেড়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা এও জানান অঙ্গদানকারী যদি সুস্থ এবং সম্পূর্ণরূপে অবগত হন, তাহলে কেবল বয়স অঙ্গদানের ক্ষেত্রে বাধা হয় না। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে