নয়াদিল্লি: দিল্লির চাঁদবাগে আপ পুরপ্রতিনিধি তাহির হোসেনের বাড়ি পৌঁছল ফরেনসিক দল। এই বাড়িতেই আইবি অফিসার অঙ্কিত শর্মাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গতকাল সংবাদমাধ্যম তাহিরের বাড়ি গিয়ে দেখায়, কীভাবে সেখানে পেট্রোল বোমা, অ্যাসিডের বোতল ও ইটপাথর মজুত রাখা হয়েছে। কিন্তু যেভাবে সে সব ঘাঁটাঘাঁটি করা হচ্ছিল, তাতে প্রশ্ন ওঠে, ওর ফলে ফরেনসিক প্রমাণ নষ্ট হল কিনা।


পূর্ব দিল্লির নেহরু বিহারের ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি হওয়ার পাশাপাশি তাহির ব্যবসায়ী, এতদিন পর্যন্ত তাঁর নামে কোনও ফৌজদারি মামলা ছিল না। কিন্তু বুধবার দিল্লির চাঁদবাগ এলাকার নর্দমা থেকে উদ্ধার হয় ২৬ বছরের অঙ্কিত শর্মার দেহ। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, চাঁদবাগেই তাহিরের বাড়ির ছাদ থেকে বেশ কয়েকজন পাথর ছুঁড়ছিল, তারাই অঙ্কিতকে খুন করেছে। অঙ্কিতের বাবা রবীন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, অফিস থেকে ফেরার সময় তাঁর ছেলের ওপর হামলা চলে। যেখানে পাথর ছোঁড়া চলছিল, সেখানে গিয়েছিলেন অঙ্কিত। তখন তাহিরের বাড়ি থেকে ১৫-২০ জন বেরিয়ে আসে, ৫-৬ জনকে বাড়ির ভেতর টেনে নিয়ে যায় তারা। যাঁরা তাঁদের বাঁচাতে চেয়েছিলেন তাঁদের ওপর গুলি চলে। রবীন্দ্রের অভিযোগ, তাহির দেশবিরোধী, তাঁর বাড়ি থেকেই লোকে পাথর ছুঁড়ছিল। অঙ্কিতের ওপর ছোরা দিয়ে হামলা চলে, তিনি ছাড়া আরও একজনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য অঙ্কিতের দেহ পাঠানো হয়েছে গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে।

ছেলে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর তিনি এফআইআর করেন বলে রবীন্দ্র জানিয়েছেন।

বিজেপি নেতা কপিল শর্মারও অভিযোগ, তাহিরই খুন করিয়েছেন অঙ্কিত শর্মাকে। তাহিরের সঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের টানা যোগাযোগ ছিল বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। কেজরীবাল ও আপ নেতা সঞ্জয় সিংহের ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করলেই দিল্লি হিংসার সঙ্গে তাঁদের যোগসাজস স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে তাঁর দাবি। তিনি টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি বাড়ির ছাদ থেকে দুষ্কৃতীরা পেট্রোল বোমা আর পাথর ছুঁড়ছে। কপিল ও এলাকার অন্যান্যদের দাবি, ওটা তাহিরের বাড়ি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁকে গ্রেফতারের দাবি করেছেন তাঁরা।



ঘোন্ডা এলাকার বিজেপি বিধায়ক অজয় মাহাওয়ারেরও অভিযোগ, পাথর ছোঁড়া চলাকালীনই একদল লোক অঙ্কিতকে বাড়ির ভেতর টেনে নিয়ে যায়। সেখানে নির্মমভাবে মারধর করা হয় তাঁকে, গলা ছুরি দিয়ে কেটে দেওয়া হয়। তারপর দেহ ছুঁড়ে ফেলা হয় নর্দমায়। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, আইন তাদের ছাড়বে না।

যদিও একটি ভিডিও প্রকাশ করে তাহিরের দাবি, অঙ্কিতের খুনের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। একদল লোক তাঁর বাড়ি জোর করে ঢুকে পড়ে, হামলা চালানোর জন্য ছাদে উঠে যায়। তাঁর নামে যে খবর ছড়িয়েছে তা মিথ্যে, বরং কপিল মিশ্রর বিতর্কিত বক্তৃতার পর দিল্লির পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে তাঁর দাবি।  তাহিরের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হওয়ার পর আম আদমি পার্টি তাঁকে সাসপেন্ড করেছে। তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি সাসপেন্ডই থাকবেন বলে টুইট করে জানিয়েছে আপ।