নয়াদিল্লি : 'গত ২৪ ঘণ্টায় ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন গুরুতর অসুস্থ। হাসপাতালে আর মাত্র ২ঘণ্টা চালানোর মতো অক্সিজেন বাকি রয়েছে। সঠিকভাবে কাজ করছে না ভেন্টিলেটর-বাইপ্যাপগুলো। জরুরী ভিত্তিতে অক্সিজেনের ব্যবস্থা না করা হলে বাঁচানো যাবে না আরও ৬০জন মুমূর্ষুকে।' গলায় একরাশ আতঙ্ক ও হতাশা নিয়ে অসহায় এই আর্তি দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালের ডিরেক্টর জেনারেলের। দেশের রাজধানীর এই বেসরকারি হাসপাতাল সেখানকার অন্যতম সেরা নামেই পরিচিত। যেখানে এই মুহূর্তে ৫০০ করোনা রোগীর চিকিৎসা চলছে। তাই সেই হাসপাতালের ডিরেক্টরের এহেন আর্তি দেখে বর্তমানে দিল্লির সার্বিক চিকিৎসা পরিস্থিতির কথা ভেবে আঁতকে উঠছেন সকলেই।


দেশে ক্রমশ ভয়াল হয়ে উঠেছে করোনা সংক্রমণ। লাফিয়ে লাফিয়ে দৈনিক সংক্রমণ রোজই আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে। এই অবস্থায় গোটা দেশজুড়েই হাসপাতালের বেড সমস্যা ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব চিন্তা বাড়াচ্ছে। এমনিতেই দেশে যেসব রাজ্য সবথেকে বেশি করোনার ধাক্কায় বিপন্ন, তাদের মধ্যে অন্যতম দিল্লি। এই মুহূর্তে আপদকালীন ভিত্তিতে সেখানে কয়েকদিনের লকডাউন চললেও পরিস্থিতি রোজই যেন আয়ত্ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছে।


এই নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার আপদকালীন পরিস্থিতিতে অক্সিজেন চেয়ে বার্তা দিল দিল্লি গঙ্গারাম হাসপাতাল। গত কয়েকদিন ধরেই দিল্লি তথা দেশের একাধিক হাসপাতাল অক্সিজেনের অভাব নিয়ে ক্রমাগত তাদের আর্তি জানিয়েছে, যে পরিস্থিতির রেশ দিল্লি হাইকোর্ট হয়ে গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। হাইকোর্টের পক্ষ থেকে দ্রুত অক্সিজেনের সরবরাহ নিশ্চিত করার বার্তা প্রথমে দেওয়া হয়।


বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া দেশে এই মুহূর্তে কার্যত জরুরী অবস্থা চলছে। তাই অক্সিজেন ও বিভিন্ন জীবনদায়ী ওষুধ কীভাবে যাদের প্রয়োজন তাদের কাছে পৌঁছবে সেই নিয়ে নীতি নির্ধারণ করা দরকার। গোটা পরিস্থিতি নিয়ে এদিনই জরুরী ভিত্তিতে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।


দেশের বেশ কিছু জায়গায় বিমান-সড়কপথে অক্সিজেন সরবরাহের কাজ শুরুও হয়েছে।