নয়া দিল্লি : জার্মান একনায়কতন্ত্রী শাসক অ্যাডল্ফ হিটলারকে (German Dictator Adolf Hitler) "সহজাত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন" বলেছিলেন। তাও আবার সোশাল মিডিয়ায়। সেই 'দায়ে' এক কর্মীকে বরখাস্ত করল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কনসালটিং ফার্ম Deloitte। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রের খবর।
Deloitte-এর রিস্ক অ্যাডভাইসরি ডিপার্টমেন্টের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর নীরব মেহরোত্রা। গত সপ্তাহে LinkedIn-এ একটি পোস্ট করেন তিনি। তাতে তিনি লেখেন, তিনি লরেন্স রিস এর লেখা একটি বই পড়েছেন। বইটির নাম The Dark Charisma of Adolf Hitler। তিনি বলেন, এই শাসককে নিয়ে গুগল সার্চ করলে দেখা যাবে, তিনি "স্বৈরাচারী" ও "খুব অহঙ্কারী" ছিলেন বলে উল্লেখ রয়েছে।
যদিও মালহোত্রা হিটলারের কিছু সহজাত গুণের কথা উল্লেখ করেন। এর সঙ্গে মন্তব্য করেন, 'আমাদের সকলের তাঁর থেকে শেখা উচিত।' তিনি আরও বলেন, 'জার্মান এই শাসক ছিলেন একজাত "সহজাত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন" মানুষ। আকর্ষণীয় বক্তা, অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী, খুব বুদ্ধিদীপ্ত এবং ব্যাপক কর্মচঞ্চল।'
তাঁর এই পোস্টের সমালোচনা করেন একাধিক ট্যুইটার ব্যবহারকারী। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, Deloitte কেন এরকম একজন কর্মীকে রেখেছেন। প্রবল সমালোচনার মুখে মেহরোত্রা একটি খোলা চিঠি লিখে, নিজের পোস্টের জন্য ক্ষমা চান। উল্লেখ করেন, 'তিনি কারও অনুভূতিকে আঘাত করতে চাননি।' এমনই খবর Moneycontrol -এর রিপোর্ট অনুযায়ী।
নীরবের বক্তব্য, "আমার মেন্টর/বস/কোচেরা সবসময় আমাকে শিখিয়েছেন, যদি আমি কোনও ভুল করে থাকি, তাহলে তা স্বীকার করার ক্ষমতা থাকা উচিত। তাই আমি আমার পোস্টের জন্য ক্ষমা চাইতে এগিয়ে এসেছি এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের মানুষদের নিয়ে আমি কিছু লিখব না।" মেহরোত্রা পরে পুরনো পোস্টটি ডিলিট করে দেন।
এক প্রেস বিবৃতিতে Deloitte-এর তরফে এক মুখপাত্র বলেন, "নির্দিষ্টি এক ব্যক্তি সোশাল মিডিয়ায় নিজের মতামত জানিয়েছেন, যিনি গত মাসেই আমাদের প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। তাঁর মতামত আমাদের মতামতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং আমাদের অভ্যন্তরীণ নীতি লঙ্ঘন করেছেন তিনি ৷ এই কর্মী আর Deloitte ইন্ডিয়ার হয়ে কাজ করেন না।"
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অস্ট্রিয়া ঘোষণা করেছে যে তারা পুলিশ অফিসারদের মানবাধিকার প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য অ্যাডলফ হিটলারের জন্মস্থানটি ব্যবহার করবে। জার্মান স্বৈরশাসক ১৮৮৯ সালে বাড়ির উপরের তলায় একটি ভাড়া ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই সিদ্ধান্তটি একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির দীর্ঘ আলোচনার পরে নেওয়া হয়েছে। জার্মান সীমান্তের কাছে Braunau am Inn-এ ১৭ শতকের বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াইয়ের পর ২০১৬ সালে সরকার কিনেছিল।