নয়াদিল্লি: কার্পেট উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের। বাঁশের মেঝের জন্য উপকরণ এসেছে ত্রিপুরা থেকে। আর পাথরে খোদাইয়ের কাজ হয়েছে রাজস্থানে। কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, নতুন সংসদ ভবন সাজিয়ে তোলার সময়ও ভারতের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির দিকে নজর রেখেছিল নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন। 


আর কী?
সূত্রের খবর, ভবন তৈরির কাজে যে সেগুন কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে সেটি এসেছে মহারাষ্ট্রের নাগপুর থেকে। আবার লাল ও সাদা বেলেপাথর আনা হয় রাজস্থানের সরমথুরা থেকে। ইতিহাসবিদদের ধারণা, লালকেল্লা এবং হুমায়ুনের সমাধিতে যে বেলেপাথর ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলিও রাজস্থানের সরমথুরার। এক সরকারি আধিকারিকের কথায়, 'সহজ ভাবে বললে গণতন্ত্রের মন্দির নির্মাণ করতে গোটা দেশকে এক জায়গায় আনা হয়েছে যার মাধ্যমে 'ঐক্যবদ্ধ ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত'-র ভাবনাই ফুটে ওঠে।' লোকসভা ও রাজ্যসভা কক্ষের যে অংশগুলি ইস্পাতের, সেগুলি বানানো হয়েছে দমন ও দিউ এলাকায়। আর আসবাব তৈরি হয়েছে মুম্বইয়ে। মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, গুজরাত থেকে নানাও উপকরণ এসেছে সেখানে। 


উদ্বোধন নিয়ে...
২৮ মে, রবিবার এই নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পুরনো সংসদ ভবনের থেকে আকারে প্রায় ৩ গুণ বড় নতুন এই সংসদ ভবন। যা তৈরি হয়েছে ৬৪ হাজার ৫০০ বর্গমিটার জায়গার ওপর।পুরনো সংসদ ভবন ছিল বৃত্তাকার। আর নতুন ভবন ত্রিভুজাকার। পুরনো ভবনে লোকসভায় আসন ছিল ৫৪৩টি। নতুন ভবনে লোকসভায় একসঙ্গে বসতে পারবেন ৮৮৮ জন। পুরনো সংসদ ভবনে রাজ্য়সভার আসন ছিল ২৫০টি। আর নতুন ভবনে রাজ্যসভার আসন সংখ্যা বেড়ে হচ্ছে ৩৮৪। নতুন লোকসভা কক্ষের নকশা তৈরি করা হয়েছে জাতীয় পাখি ময়ূরের আদলে। আর রাজ্যসভা কক্ষের নকশা জাতীয় ফুল পদ্মের আদলে। শুক্রবার নতুন সংসদ ভবনের একটি ১ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের ভিডিও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।সেই ভিডিওর টপ শটে ৬৫ হাজার বর্গমিটার জুড়ে ছড়িয়ে থাকা নতুন সংসদ ভবন চত্বরে ছবি ধরা পড়েছে। ব্রিটিশ স্থপতি এডুইন লুটিয়েন্স এবং হারবার্ট বেকার ১৯২৭ সালে যে ভবন তৈরি করেছিলেন, সেই হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের অন্য দিকেই তৈরি হয়েছে নয়া সংসদ ভবন চত্বর। পুরনো সংসদ ভবনটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হবে। কেন্দ্রের বক্তব্য, নানা কারণে সেটির উপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ পড়েছিল। সেখান থেকেই নতুন সংসদ ভবনের ভাবনা। উদ্বোধনী-মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে আনা হচ্ছে ৭৫ টাকার বিশেষ কয়েন। পাশাপাশি ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষেও আনা হচ্ছে এই কয়েন। ঘোষণা অর্থমন্ত্রকের।তবে ২০টি বিরোধী রাজনৈতিক দল এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে ব্রাত্য রাখার বিরোধিতায় একজোট হয়েছে বিরোধী শিবির।


আরও পড়ুন:শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে বিশেষভাবে উপকারী নারকেল, কীভাবে ব্য়বহার করবেন?