মুম্বই: আর্থিক টানাপোড়েন চলছে। তার জন্য উড়ানে কাটছাঁট। সিদ্ধান্ত জানাল গো ফার্স্ট এয়ারলাইন। বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ৩ এবং ৪ মে, অর্থাৎ চলতি সপ্তাহের বুধ এবং বৃহস্পতিবার তাদের সব উড়ান বাতিল করা হয়েছে। জ্বালানি নিয়ে তৈল সংস্থাগুলির সঙ্গে ঝামেলার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। একই সঙ্গে পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যাও রয়েছে। যাত্রীদের একাংশ জানিয়েছেন, সংস্থার তরফে ইমেলে বিমান বাতিলের কথা জানানো হয়। পরিচালনা সংক্রান্ত সমস্যার কথআ উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।


গো ফার্স্ট-এর তরফে উড়ান বাতিলের ঘোষণা হওয়ার পরই তাগের নোটিস ধরিয়েছে দেশের বেসামরিক উড়ান পরিষেবা সংস্থা DGCA. আগে ভাগে কেন বিষয়টি জানানো হল না, শেষ মুহূর্তে কেন সব বিমান বাতিল করা হল, তোলা হয়েছে প্রশ্ন। বিমান বাতিল করার আগে নি.য়ম মাফিক DGCA-কে জানাতে হয় সব বিমান সংস্থাকে। অন্য়থায় বিমান বাতিলের সিদ্ধান্ত বেসামরিক উড়ান আইন লঙ্ঘনের আওতায় পড়ে। 


যদিও গো ফার্স্ট জানিয়েছে, একের পর এক বিমানের ইঞ্জিনে গোলযোগ দেখা দিচ্ছে। কিন্তু আমেরিকার যে প্র্যাট অ্যান্ট হুইটনি (P&W) ইন্টারন্য়াশনাল এ্যারো ইঞ্জিন্স সংস্থার কাছ থেকে ব্যবহৃত ইঞ্জিন কেনা হয়, সেই সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে এই মুহূর্তে সস্থার ৫০ শতাংশ বিমানই চলাচল করছে। তার উপর জ্বালানি নিয়ে তেল সংস্থাগুলির সঙ্গেও ঝামেলা শুরু হয়েছে। তেল সংস্থাগুলি ধারবাকিতে তেল সরবরাহে রাজি নয়। দিনের দিন টাকা মিটিয়ে নেওয়ার নিয়ম শুরু হয়েছে। আর্থিক অনটনের জেরে সেই ধারা মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে গো ফার্স্ট।


গো ফার্স্ট এয়ারলাইন্স ওয়াদিয়া গোষ্ঠীর মালিকানাধীন। বেশ কিছু দিন ধরেই সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তারা। কর্মীদের বেতন দিতেও দেরি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, P&W সংস্থার বিরুদ্ধে আমেরিকায় আইনি পদক্ষেপেও তারা উদ্যোগী হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দ্রুত ইঞ্জিন সরবরাহ না হলে, গো ফার্স্ট নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করতে বাধ্য হবে, সংস্থার তরফে এমন দাবিও করা হয়েছে বলে খবর। যদিও ওয়াদিয়া গোষ্ঠী এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।


গত তিন বছরে গো ফার্স্ট-এ ৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে বিগত ২৪ ঘণ্টাতেই ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়। এ বছর এপ্রিল মাসেই শুধু ২৯০ কোটি টাকা জমা পড়ে সংস্থায়। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত সংস্থায় প্রোমোটাররা ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঢেলেছেন। সংস্থার মোট কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। কিন্তু ২০২৩ অর্থবর্ষে শেয়ার বাজারে সংস্থার পতন হয়েছে ৮ শতাংশ। 


নিজেদের ওয়েবসাইটে গো ফার্স্ট জানিয়েছে, তাদের কাছে ৫৯টি বিমা রয়েছে, যার মধ্যে ৫৪টি A320 Neo এবং পাঁচটি A320 CEO. কিন্তু অর্থনৈতিক ভাবে বেশ কিছু দিন ধরেই টালমাটাল অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সংস্থাটি। কেন্দ্রীয় সরকারকেও এ নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে তাদের তরফে। শীঘ্রই DGCA-কে বিশদ রিপোর্ট পাঠানোর কথা জানা গিয়েছে।