রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে বৌভাতের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার সময় মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনার মৃত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র ও রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্রের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সাহায্য মেলেনি। এমনটাই দাবি করছে মৃত ও আহতদের পরিবার। আর এনিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে কাজিয়া শুরু হয়েছে।
একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। আর তা নিয়ে উঠল বঞ্চনার অভিযোগ! প্রতিশ্রুতি পালন করেছে রাজ্য, অথচ তাদের কথা মনে রাখেনি কেন্দ্র। এমনটাই দাবি করছেন জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে দুর্ঘটনায় মৃত ও আহতদের পরিজনরা। একই অভিযোগ করছেন ছেলে ও নাতি হারানো বিজেপি নেতাও!
তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। ১৯ শে জানুয়ারি ধূপগুড়িতে বৌভাতের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তিন শিশু-সহ ১৪ জনের।
তখনই আর্থিক সাহায্য নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল বিজেপি বনাম তৃণমূলের টক্কর! দুর্ঘটনার খবর পেয়ে, ট্যুইট করে নিহতদের জন্য দু’লক্ষ টাকা ও আহতদের জন্য পঞ্চাশ হাজার করে টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
এরপর ওইদিনই আলাদাভাবে সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি জানান, ‘‘মৃতদের পরিবারপিছু আড়াই লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ও সামান্য আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ৷’’
এরপরই দুর্ঘটনাগ্রস্থ পরিবারের হাতে প্রতিশ্রুতিমতো আর্থিক সাহায্য তুলে দেয় রাজ্য সরকার। তবে প্রধানমন্ত্রীর দফতর আর্থিক সাহয্যের ঘোষণা করলেও এখনও পর্যন্ত কানাকড়িও মেলেনি বলে দাবি করেছে স্বজনহারা পরিবারগুলি।
মৃতের আত্মীয় ও ময়নাগুড়ির বিজেপির বুথ সভাপতি পরমানন্দ রায় জানিয়েছেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের চেক মুখ্যমন্ত্রীর পুরোটাই পেয়েছি, কিন্তু কেন্দ্রের ঘোষিত অর্থ কিছুই পাচ্ছিনা কোথায় পাব, কেই বা দেবে জানি না, এখন আর কেউ খবরও নিচ্ছেন না ৷’’
মৃতের এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘কেন্দ্র ঘোষনা করেছিলো দুই লক্ষ টাকা করে দেবে যাদের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে আর আহতদের ২৫ হাজার টাকা দেবে কিন্তু কেউই পায়নি, তবে রাজ্য সরকার সবটাই দিয়ে দিয়েছে ৷’’
আর এই ইস্যুতে স্বজনহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে মোদি সরকারকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। ময়নাগুড়ির তৃণমূল ব্লক সভাপতি মনোজ রায় বলেছেন, ‘‘মৃত মানুষদের নিয়ে উনি নোংরা রাজনীতি করছেন, ভোটের আগে ভাঁওতা, ভোটের আগে নাটক, নির্বাচন না থাকলে উনি খোঁজও নিতেন না ৷’’
জলপাইগুড়ির বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘জেলাশাসক কে প্রশ্ন করুন গিয়ে ? কেন্দ্রের টাকা রাজ্য সরকারের মাধ্যমেই দিতে হয় সরাসরি দেওয়া যায় না, ওনারা টাকা আটকে রাখলে আমরা কি করব ৷’’
এ বিষয়ে জেলাশাসক জানিয়েছেন, পিএমও থেকে পাঁচ-ছদিন আগে একটি চিঠি আসে। সেখানে বলা হয়েছে প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠাতে। সেটা করতে চার-পাঁচদিন সময় লাগবে। সব অ্যাকাউন্ট নম্বর পেয়ে গেলে কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হবে।