কলকাতা: বরাবরই উদ্বেগ থাকে ডায়াবেটিস (Diabetes) নিয়ে। যাঁদের এই সমস্যা রয়েছে, তাঁরা যেমন চিন্তায় থাকেন। তেমনই যাঁদের পারিবারিক স্বাস্থ্যের ইতিহাসে ডায়াবেটিস বা হাই ব্লাড সুগারের সমস্যা রয়েছে, তাঁরাও সাবধানে চলার চেষ্টা করেন। এই সাবধানের চলার দুটি মূল ভাগ। একটি যদি শরীরচর্চা হয়, তাহলে অন্যটি অবশ্যই ডায়েটে নজর। 


ভাত 'বাদ'?
ডায়াবেটিস থাকা ব্যক্তিরা নানা ভাবে তাঁদের খাবার নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। রক্তে শর্করার (Glucose) পরিমাণ বাড়তে পারে এমন খাবার পরিত্যাগ করে থাকেন। সেই তালিকায় থাকে ভাতও। কিন্তু ভারতে, বিশেষ করে পূর্ব ভারতে ভাত প্রধান খাবার। দীর্ঘদিনের ভাত খাওয়ার অভ্য়াস চট করে ছাড়া মুশকিল হয়। পাশাপাশি, একেবারেই ভাত ছেড়ে দিলে দীর্ঘদিনের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় আসা বদল নতুন করে অভ্যাস করতেও সমস্যা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন খুব বড়সড় সমস্যা না থাকলে ভাত একেবারে বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। যেটা প্রয়োজন, তা হল ঠিক পরিমাপ মেনে খাওয়া। এর জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।


ফ্যাট (Fat), প্রোটিন (Protein)-সব কিছুই প্রয়োজন সুস্থ থাকার জন্য। একই নিয়ম ডায়াবেটিকদের জন্যও। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ডায়াবেটিকদের ভাত খাওয়ার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় মূল। একটি হল কতটা পরিমাণে ভাত খাওয়া হচ্ছে, অন্য়টি হল কী কী খাবারের সঙ্গে খাওয়া হচ্ছে। 


খেয়াল থাকুক গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে:
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (Glycemic Index) হল এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে কোনও খাবারে কার্বোহাইড্রেট কতটা রয়েছে এবং সেটি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কতটা বাড়ে তা পরিমাপ করা হয়। ০ থেকে ১০০ পর্যন্ত নম্বর থাকে। যে খাবারের যত বেশি নম্বর সেটি রক্তে তত বেশি শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে।


ভারসাম্যই 'আসল': 
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এখানেই ভারসাম্যের কথা আসে। ভাত এমনিতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (Glycemic Index) অনুযায়ী উপরের দিকে রয়েছে। ফলে এটি ফ্যাট বা প্রোটিন বা ফাইবার জাতীয় খাবারের সঙ্গে ভারসাম্য মেনে খেলে সমস্যা নেই। সেক্ষেত্রে ভাতের সঙ্গে কী কী দিয়ে খেতে পারেন ডায়াবেটিকরা?


দই-ভাত: দইতে উচ্চমাত্রায় ফ্যাট ও প্রোটিন রয়েছে। এর সঙ্গে ভাত দিয়ে খেলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমে আসে।


ডাল বা রাজমার সঙ্গে ভাত: ডালজাতীয় শস্যে ফাইবার এবং প্রোটিন থাকে। এর সঙ্গে পরিমাণ মতো ভাত খাওয়া যায়। তবে ডালটি স্বাস্থ্যকর ভাবে রান্না হয়ে থাকতে হবে।


সেদ্ধ আনাজের সঙ্গে ভাত: আনাজ সেদ্ধ অত্যন্ত উপকারী। একাধিক পুষ্টিগুণ থাকে। এর সঙ্গে ভাত খেলে Glycemic Index কম থাকে।


ছোট মাছের ঝোলের সঙ্গে ভাত: ছোট মাছ প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় খনিজের উৎস, যা স্বাস্থ্য ভাল রাখতে প্রয়োজন। এর সঙ্গে ভাত খাওয়া যায়। তবে কোনও খাবারই বেশি মশলা ও তেল দিয়ে রান্না করা উচিত নয়।


ডিসক্লেইমার : কপিতে উল্লেখিত দাবি, পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপদ্ধতি/ডায়েট ফলো করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ / চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন ও সেইমতো নিয়ম মেনে চলুন।


আরও পড়ুন: প্রেসক্রিপশনে ওষুধ লেখার জন্য হাজার কোটি টাকা ইনসেনটিভ 'ডলো'-র নির্মাতার, দাবি সুপ্রিম কোর্টে