নয়াদিল্লি : বৃহস্পতিবার মাহামান্য সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল যে, বাজি (Crackers) বিক্রি নিষিদ্ধ করার কারণ কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষকে বিপাকে ফেলা নয়। বরং, এদেশের ১৩০ কোটি মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করাই এর উদ্দেশ্য। বিশেষ করে দিল্লির মানুষ জানেন, দূষণ তাঁদের জীবনকে কতটা দুর্বিষহ করে তুলেছে। সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ, যা গঠিত হয়েছে বিচারক এম আর শাহ এবং বিচারক এ এস বোপান্নার উপস্থিতিতে। সেই বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'আনন্দ, উত্সবের কারণে কোটি কোটি নাগরিকের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করার সুযোগ দেওয়া হবে না। আমরা কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিপক্ষে নই। কিন্তু একটা কড়া বার্তা মানুষকে দিতে চাই যে, আমরা এখানে বলব সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের কথাই।'
প্রসঙ্গত, এর আগে আদালতের পক্ষ থেকে কিন্তু সম্পূর্ণ বাজি বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। আদালতের বক্তব্য, যে বাজি বিক্রেতাদের লাইসেন্স রয়েছে, শুধুমাত্র তাঁরাই বাজি বিক্রি করতে পারবেন। তবে, অনলাইনে বাজি বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। শুধুমাত্র সবুজ বাজি বিক্রি করা যাবে। কিন্তু এরপরও মহামান্য আদালতের পর্যবেক্ষণ যে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খোলাবাজারে অনেক জায়গাতেই বাজি বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। এই বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে মহামান্য আদালত। তাদের বক্তব্য, অবিলম্বে আদালতের নির্দেশ মেনে এই বাজি বিক্রি রুখতে হবে।
কারণ হিসেবে বিচারক এম আর শাহ এবং বিচারক এ এস বোপান্নার ডিভিশন বেঞ্চ বলেছেন, 'ভুলে গেলে চলবে না বেশিরভাগ মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করাই আমাদের কাজ। এমন করে প্রচার করা হচ্ছে যাতে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধেই এই মত। অথবা, এটা নাকি কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেই করা হচ্ছে। কিন্তু মূল বিষয় থেকে আমরা অন্তত সরে যাব না। গোটা দেশ জানে, দিল্লির মানুষ দূষণের জন্য ঠিক কতটা সমস্যায় পড়ে থাকেন। আনন্দ উত্সবের নাম করে বাজি বিক্রিতে ছাড় দিলে একশো তিরিশ কোটি মানুষের তো বটেই দিল্লির মানুষের অভিজ্ঞতা আরও ভয়াবহ হবে। জেনে বিঝে যা আমরা কিছুতেই করতে দিতে পারি না। দেশের সাধারণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিয়ে ছেলেখেলা করার অধিকার কোনও ব্যবসায়ীরই থাকতে পারে না। মাথায় রাখতে হবে, কোনও ব্যবসা কিংবা কোনও আনন্দ উত্সবই মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার দেয় না।'